
ভুবনেশ্বর: ভয়ঙ্কর। খুদে বাচ্চাটা রয়ে গিয়েছে ক্লাসরুমে, লক্ষ্যই করেননি শিক্ষিকা। তাঁকে ক্লাসরুমে তালাবন্দি করে রেখেই চলে গেলেন। সারা রাত স্কুলেই বন্দি থাকল দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। বন্ধ ক্লাসরুম থেকে বেরনোর জন্য জানালা দিয়ে বেরনোর চেষ্টা করেছিল সে, তাতে আরও বিপদ ঘটে। জানালার মধ্যে মাথা আটকে যায় ওই পড়ুয়ার।
ওড়িশার কেওনঝড়ে এই ঘটনা ঘটেছে। জ্যোৎস্না দেহুরি নামক আট বছরের নাবালিকা অঞ্জরের সরকারি আপার প্রাইমারি স্কুলে পড়ত। দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া গত বৃহস্পতিবার স্কুলে গিয়েছিল, কিন্তু আর বাড়ি ফেরেনি। সারা রাত তাঁর মা-বাবা তাঁকে খোঁজে। শুক্রবার সকালে স্কুল থেকেই উদ্ধার করা হয় ওই ছাত্রীকে। দেখা যায়, জানালার গ্রিলের মাঝে আটকে তাঁর মাথা। ওভাবেই সারা রাত কাটিয়েছে সে। কিন্তু কীভাবে এমন পরিণতি হল?
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টেয় স্কুল ছুটি হয়েছিল। ক্লাসরুম থেকে বেরতে দেরি হয়েছিল জ্যোৎস্নার, শিক্ষিকা তা না দেখেই ক্লাসরুম বন্ধ করে চলে যান। পরে স্কুলের অশিক্ষক কর্মীরাও দেখেননি যে ক্লাসরুমের ভিতরে আটকে রয়েছে দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া। তারা স্কুল তালা বন্ধ করে চলে যান।
এদিকে, রাত হতেই জ্যোৎস্না আরও ভয় পায়। দীর্ঘক্ষণ দরজায় ধাক্কা দিয়েও কেউ দরজা না খোলায়, জানালা দিয়ে বেরনোর চেষ্টা করে সে। লোহার রডের মাঝখান থেকে শরীর গলিয়ে বেরনোর চেষ্টা করে, কিন্তু তাঁর মাথা আটকে যায় গ্রিলে। ওই অবস্থাতেই সারা রাত আটকে থাকে নাবালিকা।
জ্যোৎস্নার মা-বাবা সারা রাত ধরে তাঁকে খুঁজলেও কোথাও পায়নি। স্কুলেই যে মেয়ে আটকে রয়েছে, তা ভাবতেও পারেননি তারা।
পরেরদিন, শুক্রবার যখন সকাল ৯টার সময় স্কুলের রাঁধুনি আসেন এবং ক্লাসরুম খোলেন, তখন দেখেন যে দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ওভাবে আটকে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। শেষে স্থানীয় বাসিন্দা ও নাবালিকার পরিবার এসে জানালার রড বেঁকিয়ে জ্যোৎস্নাকে উদ্ধার করে। তাঁকে দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই নাবালিকা এখন সুস্থ রয়েছেন।
তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন অবহেলা ও গাফিলতির জন্য জেলা প্রশাসনের তরফে ওই প্রাথমিক স্কুলের হেডমাস্টার গৌর হরি মহান্তকে সাসপেন্ড করেছে।