Uttar Pradesh BJP: লোকসভার লড়াইয়ে যোগী-রাজ্যে বিপদে বিজেপি?

Jan 26, 2024 | 9:44 AM

Uttar Pradesh BJP: ভারতীয় রাজনীতিতে প্রচলিত প্রবচন, দিল্লি দখলের রাস্তা নাকি উত্তর প্রদেশ হয়ে যায়। গত বছর এই রাজ্যের উপনির্বাচনে ঘোসী আসনটি সমাজবাদী পার্টির কাছে হারাতে হয়েছে বিজেপিকে। সেখানে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়েছিল ইন্ডিয়া জোট। যা স্বপ্ন দেখাচ্ছে জোটের নেতাদের। ২০২৪-এ কি তাহলে উত্তর প্রদেশে বিপদে পড়বে বিজেপি?

Uttar Pradesh BJP: লোকসভার লড়াইয়ে যোগী-রাজ্যে বিপদে বিজেপি?
উত্তর প্রদেশে ১৭টি আসন চিন্তায় রেখেছে শাহ, যোদী, মোদীকে (ফাইল ছবি)
Image Credit source: ANI

Follow Us

লখনউ: ভারতীয় রাজনীতিতে প্রচলিত প্রবচন, দিল্লি দখলের রাস্তা নাকি উত্তর প্রদেশ হয়ে যায়। অর্থাৎ উত্তর প্রদেশের ৮০টি লোকসভা আসনের মধ্যে যারা যত বেশি জিততে পারবে, দিল্লিতে সরকার গঠনের সম্ভাবনা সেই দলের তত বেশি থাকে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রবল মোদী হাওয়ার মধ্যে উত্তর প্রদেশে বিজেপি জিতেছিল ৭১টি লোকসভা আসনে। ২০১৯ সালে বিজেপির আসন সংখ্যা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬২-তে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। ২০২২-এ ফের ক্ষমতায় ফিরেছেন যোগী, তবে আসন সংখ্যা কিছুটা কমেছে। এর মধ্যে আবার গত বছর উপনির্বাচনে ঘোসী আসনটি সমাজবাদী পার্টির কাছে হারাতে হয়েছে বিজেপিকে। ২০২৪-এ কি তাহলে উত্তর প্রদেশে বিপদে পড়বে বিজেপি?

বিজেপির শীর্ষ কর্তারা কিন্তু মনে করছেন, যোগী রাজ্যে সার্বিক ভাবে দলের অবস্থা ভালই রয়েছে। বিশেষ করে রাম মন্দির নিয়ে যে দেশ জোড়া আবেগ তৈরি হয়েছে, তার প্রভাব উত্তর প্রদেশে দলের বোটবাক্সে পড়তে বাধ্য। তারপরও চিন্তায় রেখেছে ১৭টি লোকসভা আসন – বিজনৌর, নগিনা, সাহারানপুর, মোরাদাবাদ, রামপুর, সম্ভল, আমরোহা, বদায়ূঁ, আজমগড়, ঘোসী, গাজীপুর, রায়বরেলি, ফিরোজাবাদ, শ্রাবস্তী, আম্বেদকর নগর, মৈনপুরি এবং লালগঞ্জ। এই ১৭টি আসনের মধ্যে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি জিতেছিল শুধুমাত্র বদায়ূঁ এবং ফিরোজাবাদে। পরে উপনির্বাচনে রামপুর ও আজমগড়ও জিতে নিয়েছিল। আর, ২০২২ সালের উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে, শুধুমাত্র সাহারানপুর, রামপুর, আমরোহা এবং শ্রাবস্তীতে এগিয়ে ছিল বিজেপি।

কাজেই এই আসনগুলিতে সমাজবাদী পার্টি তথা ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে কড়া টক্কর হতে পারে গেরুয়া শিবিরের। ইন্ডিয়া জোট কেন বলা হচ্ছে? এর কারণ, উত্তর প্রদেশে ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা এককাট্টা হয়ে লড়লে কী হতে পারে, তার হাতে-গরম নিদর্শন রয়েছে ঘোসী বিধানসভা উপ-নির্বাচনে। ২০২৩-এর শেষদিকে হওয়া এই নির্বাচন, বলা যেতে পারে ইন্ডিয়া জোটের প্রথম পরীক্ষা ছিল। সমাজবাদী পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন করেছিল কংগ্রেস। আর উপনির্বাচনে লড়বেন না বলে প্রার্থী দেননি মায়াবতী। ফলে কার্যত বিজেপির সঙ্গে একের বিরুদ্ধে এক টক্কর ছিল সপার। সাধারণত, উপনির্বাচনে জয় পায় শাসক দলই। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে সপা তথা ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী প্রায় ৪২ হাজার ভোটে জয় পেয়েছিলেন। এই নির্বাচন দেখিয়ে দিয়েছে, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিকরা যদি বিবাদ ভুলে সর্বসম্মত প্রার্থী দাঁড় করাতে পারে, উত্তর প্রদেশের সব আসনেই কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়তে হবে বিজেপিকে।

কিন্তু, তা হওয়ার নয়। এই উপনির্বাচনের পর, ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। মধ্য প্রদেশে কংগ্রেসের কাছে মাত্র ৬টি আসন চেয়ে অপমানিত হতে হয়েছে অখিলেশ যাদবকে। কাজেই, নিজ রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির ক্ষেত্রে কতটা ভাঙবেন তিনি, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। প্রক্রিয়া মোটেই মসৃণ হবে না।

দ্বিতীয়ত, ঘোসীর লড়াইয়ে ছিল না বসপা। ফলে লড়াই ছিল দ্বিমুখী। দলিত ভোটের পুরোটাই পেয়েছিলেন জোটের প্রার্থী। গত লোকসভা নির্বাচনে সপার সঙ্গে জোট বেঁধে লড়ে বিশেষ সুবিধা হয়নি মায়াবতীর। তাই, এবার এখনও পর্যন্ত তিনি এনডিএ ও ইন্ডিয়া – দুই জোট থেকেই সমদূরত্ব বজায় রেখেছেন। মায়াবতীকে জোটে না বেড়াতে পারলে, দলিত ভোটব্যাঙ্ক কিন্তু এককাট্টা রাখা যাবে না।

তৃতীয়ত, মধ্য প্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ের সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচন দেখিয়েছে, কঠিন পিচেও কীভাবে পড়ে থেকে রান কুড়োতে পারেন বিজেপি কর্মীরা। বিজেপির ভোট মেশিনারির সঙ্গে, ইন্ডিয়া জোটের ভোট মেশিনারির এখনও তুলনাই হয় না। বুথ স্তরে পড়ে থেকে যেভাবে বিজেপি কর্মীরা নিজেদের সব ভোট বাক্সে পড়া নিশ্চিত করে থাকেন, তা এখনও ইন্ডিয়া জোটের কোনও দল করে দেখাতে পারেনি।

Next Article