নয়া দিল্লি: সংসদে কারও জাত বা ধর্ম উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকার বিষয়ে সাংসদদের সতর্ক করলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। সোমবার (১২ ডিসেম্বর), সংসদে কংগ্রেস সাংসদ এআর রেড্ডি অভিযোগ করেন, তিনি নিচু বর্ণের বলেই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন তাঁর হিন্দি বলার অদক্ষতা নিয়ে তীর্যক মন্তব্য করেছেন। নিজের সামাজিক অবস্থান বোঝাতে রেড্ডি একটি বিশেষ শব্দ প্রয়োগ করেন। এরপরই ওম বিড়লা সাংসদদের উদ্দেশে ওই সতর্কতা জারি করেন। ওম বিড়লা বলেন, তাঁর জাত এবং ধর্মের জন্য কোনও সাংসদকে লোকসভায় নির্বাচিত করা হয়নি।
সাংসদদের সতর্ক করে ওম বিড়লা বলেন, “এখানে কেউ কখনও এই জাতীয় শব্দ ব্যবহার করবেন না। অন্যথায়, আমাকে সাংসদদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।” এদিন সংসদে এই বিষয়ে প্রশ্ন তোলার সময়, ওম বিড়লাকে “বাধা না দেওয়ার” অনুরোধ করেছিলেন এআর রেড্ডি। তাঁর ওই মন্তব্য নিয়েও আপত্তি জানান লোকসভার সাংসদ। কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীকে স্পিকার বলেন, তাঁর দলের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বোঝাতে, যাতে তাঁরা কখনও স্পিকার সম্পর্কে এমন মন্তব্য না করেন। অধীর চৌধুরীকে তিনি বলেন, “আপনি সংসদের নেতা। সদস্যদের বোঝান যে, তারা যেন ভবিষ্যতে স্পিকারের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য না করেন। না বলেন যে আপনি (স্পিকার) বাধা দিতে পারেন না। আমি কি বলেছি আপনি বুঝতে পারছেন?”
এদিন এআর রেড্ডি, ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রার দাম পড়ে যাওয়া নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তোলেন। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, টাকা আইসিইউ-তে চলে গিয়েছে। সেই মন্তব্যের উল্লেখ করেন কংগ্রেস সাংসদ। স্পিকার তাঁর এই মন্তব্যে আপত্তি জানিয়ে তাঁকে শুধু তাঁর প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার নির্দেশ দেন। তাতেই রেড্ডি বলেছিলেন, “স্যার, আপনি বাধা দিতে পারেন না।” এর থেকেই এই বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে।
এআর রেড্ডির প্রশ্নের জবাব, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেন, কংগ্রেস সাংসদের “দুর্বল হিন্দিতে” করা প্রশ্নের উত্তর তিনি “দুর্বল হিন্দিতেই” দেবেন। তিনি আরও বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার দাম সম্পর্কে নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্য উল্লেখ করার সময়, কংগ্রেস সাংসদের সেই সময়ের অর্থনৈতিক সূচকগুলিও উল্লেখ করা উচিত ছিল। তিনি বলেন, “তখন অর্থনীতি অবশ্যই আইসিইউতে ছিল। ভারতকে ভঙ্গুর অর্থনীতির পাঁচটি দেশের তালিকায় রাখা হয়েছিল। আজ, ভারত কোভিড মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সত্ত্বেও দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ। এটি অত্যন্ত গর্বের বিষয়। কিন্তু, তারা (কংগ্রেস) এটা নিয়ে মজা করছে। আমাদের অর্থনীতি যখন ভালো চলছে, তখন হিংসার বশবর্তী হয়ে এমন কথা বলাটা দুঃখজনক।”