হরি রেখেছেন! হাসপাতালে শুয়েও চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন অভিশপ্ত মুহূর্ত, আগেই বুঝেছিলেন কিছু একটা হচ্ছে? যা বর্ণনা করলেন…

Lone Survivor of Air India 171 Plane Crash: বছর চল্লিশের বিশ্বাস কুমার রমেশ  লন্ডনেই থাকতেন। গুজরাটে এসেছিলেন পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে। গতকাল দাদা অজয় কুমার রমেশের সঙ্গে তিনি লন্ডনে ফিরে যাচ্ছিলেন। সেই যাওয়া আর হয়নি।

হরি রেখেছেন! হাসপাতালে শুয়েও চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন অভিশপ্ত মুহূর্ত, আগেই বুঝেছিলেন কিছু একটা হচ্ছে? যা বর্ণনা করলেন...
হাসপাতালের বেডে শুয়ে বিশ্বাস কুমার রমেশ।Image Credit source: X

|

Jun 13, 2025 | 8:17 AM

আহমেদাবাদ: কথায় আছে রাখে হরি মারে কে। বিশ্বাস কুমার রমেশ। এয়ার ইন্ডিয়ার অভিশপ্ত  এআই১৭১ বিমানের একমাত্র যাত্রী, যিনি বেঁচে রয়েছেন। যেখানে বিমান ভেঙে পড়তেই জ্বলে-পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছেন পাইলট, ক্রু সহ ২৪১ জন যাত্রী, সেখানেই মুখ ও হাত-পা সামান্য ছড়ে যাওয়া ছাড়া রমেশের বিশেষ কোনও ক্ষতি হয়নি। নিজে পায়ে হেঁটেই উঠেছেন অ্যাম্বুল্যান্সে। হাসপাতালের বেডে শুয়ে এখন তিনি কী বলছেন, জানেন?

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৮ মিনিট নাগাদ, গুজরাটের মেঘানিনগরে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ড্রিমলাইনার বিমানটি। সর্দার বল্লভ ভাই পটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টেক অফের ৪ মিনিটের মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে। ১ লক্ষ লিটারেরও বেশি জ্বালানি ছিল তখন বিমানে। বিজে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের ছাদে ভেঙে পড়ার পরই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে জ্বলে যান সকলে। একমাত্র রক্ষা পান রমেশ। আহমেদাবাদ পুলিশের কমিশনার জিএস মালিকই প্রথম এই খবর দেন যে একমাত্র একজন যাত্রীই বেঁচে রয়েছেন। সিট ১১এ থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে।

বছর চল্লিশের বিশ্বাস কুমার রমেশ  লন্ডনেই থাকতেন। গুজরাটে এসেছিলেন পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে। গতকাল দাদা অজয় কুমার রমেশের সঙ্গে তিনি লন্ডনে ফিরে যাচ্ছিলেন। সেই যাওয়া আর হয়নি। ইমার্জেন্সি এক্সিটের সামনে বসায়, বিমানটি ভেঙে পড়তেই ছিটকে বেরিয়ে যান বিশ্বাস। তাতেই রক্ষা পান। তবে ২৪২ জনের মধ্যে একমাত্র তিনিই বেঁচে, এ কথা যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না।

হাসপাতালের বিছানা থেকে শুয়ে দুর্ঘটনার পরের মুহূর্ত বর্ণনা করে তিনি বলেন, “আমার চারপাশে শুধু মৃতদেহ ছিল। বিমান টুকরো টুকরো হয়ে আমার চারিদিকে পড়েছিল। হঠাৎ কেউ একজন আমায় টেনে তুলল আর অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে গেল।”

এমন বিপর্যয় ঘটতে চলেছে, তা কি বিমানে বসে আঁচ করতে পেরেছিলেন বিশ্বাস কুমার রমেশ? উত্তরে তিনি বলেন, “টেক অফের ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে জোরে একটা শব্দ হয়। তারপরই প্লেন ক্র্যাশ হয়ে গেল। সব কিছু এত তাড়াতাড়ি হয়ে গেল।”

গুজরাটের সিভিল হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন বিশ্বাস কুমার রমেশ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর বুক, চোখ ও পায়ে আঘাত রয়েছে।  তবে নিজের যন্ত্রণার থেকেও বিশ্বাস কুমারকে বেশি কষ্ট দিচ্ছে দাদার মৃত্যু। তার আশেপাশে থাকা সমস্ত যাত্রীর মৃত্যু। এই অভিশপ্ত স্মৃতি হয়তো মনে গভীর ক্ষত তৈরি করবে।