ছায়ার মতো ঘুরছে ওঁ, লিখছে রক্ত দিয়ে লেখা চিঠি! ভয়ে আত্মারাম খাঁচাছাড়া পুলিশেরই

Police Officer:প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন যে এটা হয়তো কেউ মজা করছে, কিন্তু ফোন থামে না। প্রতিদিন ফোন আসতে থাকে। নম্বর ব্লক করলে, অন্যান্য নম্বর থেকেও ফোন করতে থাকেন ওই মহিলা। পরে তিনি আরেক নম্বর থেকে ফোন করেন। এবার বলেন যে কংগ্রেস নেত্রী তিনি।

ছায়ার মতো ঘুরছে ওঁ, লিখছে রক্ত দিয়ে লেখা চিঠি! ভয়ে আত্মারাম খাঁচাছাড়া পুলিশেরই
প্রতীকী চিত্র।Image Credit source: Meta AI

|

Dec 17, 2025 | 4:48 PM

বেঙ্গালুরু: এমনও হয়? ভয় পাচ্ছেন পুলিশ ইন্সপেক্টর। বাড়ি থেকে বেরতে, ডিউটিতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। আর আতঙ্কের কারণ একজন মহিলা। পুলিশ অফিসারের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন মহিলা। ধাওয়া করছেন, হেনস্থা করছেন। এমনকী, সম্পর্কে রাজি না হলে আত্মহত্য়া করার হুমকিও দিচ্ছেন।

শুধু ওই পুলিশ অফিসার নন, আতঙ্কে রয়েছেন ওই পুলিশ স্টেশনের বাকি কর্মীরাও। ঘটনাটি বেঙ্গালুরুর। পুলিশ ইন্সপেক্টর সতীশ জিজে গত ১৯ অগস্ট রামামূর্তি পুলিশ স্টেশনে স্টেশন হাউস অফিসার হিসাবে যোগ দেন। এক-দুই মাস সব ঠিকই চলছিল। সমস্যার শুরু হয় ৩০ অক্টোবর থেকে। পুলিশ ইন্সপেক্টরের কাছে একটি অচেনা নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ আসতে থাকে। তিনি জবাব দেন, তখন ওপ্রান্ত থেকে উত্তর আসে যে সঞ্জনা ওরফে ভজনা নামে এক মহিলার। তিনি বলেন যে পুলিশ অফিসারের প্রেমে তিনি হাবুডুবু খাচ্ছেন। তাঁকেও সাড়া দিতেই হবে।

প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন যে এটা হয়তো কেউ মজা করছে, কিন্তু ফোন থামে না। প্রতিদিন ফোন আসতে থাকে। নম্বর ব্লক করলে, অন্যান্য নম্বর থেকেও ফোন করতে থাকেন ওই মহিলা। পরে তিনি আরেক নম্বর থেকে ফোন করেন। এবার বলেন যে কংগ্রেস নেত্রী তিনি। মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে নিজের ছবিও পাঠান, ব্ল্যাকমেইল করেন যে তাঁর প্রেমের প্রস্তাবে যদি রাজি না হন, তাহলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ক্ষতি করে দেবেন।

পুলিশ অফিসার তাও গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না। তবে বিষয়টি জটিল হয়ে যায় যখন ওই পুলিশ অফিসার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপ-মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে ফোন পান, তাঁকে প্রশ্ন করা হয় যে কেন ওই মহিলার অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন না। পুলিশ অফিসার জানান যে ওই মহিলা কখনও থানায় আসেনইনি, কোনও অভিযোগও জানাননি।

এরপরে উৎপাত আরও বাড়ে। পুলিশ অফিসার যখন থানায় ছিলেন না, তখন তিনি আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ঢোকেন এবং তাঁর জন্য ফুলের তোড়া, মিষ্টির বাক্স রেখে যান। গত ৭ নভেম্বর ওই মহিলা আবার যান। পুলিশ অফিসারের কাছে তিনি একটি খাম ধরিয়ে যান। ভিতরে তিনটি চিঠি এবং ঘুমের ওষুধের পাতা ছিল।

ওই চিঠি রক্ত দিয়ে লেখা ছিল। তাতে নিজের প্রেমের প্রকাশ করেছেন এবং আত্মহত্যার হুমকি দেন। লাগাতার হেনস্থার মুখে পড়ে তদন্ত শুরু করা হয় ওই মহিলার বিরুদ্ধে। তখন উঠে আশে যে আগেও একাধিক সিনিয়র ও জুনিয়র পুলিশ অফিসারকে হেনস্থা করেছেন প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে। এরপরে স্পেশাল রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। পুলিশের টিম ওই মহিলার বাড়িতে যান তাঁর কাউন্সেলিং করার জন্য, কিন্তু ওই মহিলা সহযোগিতা করেননি। গত ১২ ডিসেম্বর ওই মহিলা আবার থানায় আসেন এবং সকলের সামনে প্রেম জাহির করেন।  এরপরই পুলিশ অফিসার বিরক্ত হয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন।