
চেন্নাই: বেঁচে আছেন তামিল টাইগার বা এলটিটিই নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ! সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি), চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন ওয়ার্ল্ড কনফেডারেশন অব টামিলস-এর সভাপতি পি নেদুমারান। তিনি আরও দাবি করেছেন, শিগগিরই তিনি প্রকাশ্যে আসবেন। পি নেদুমারান আরও বলেন, “প্রভাকরণের অনুমতিতেই আমি এই তথ্য প্রকাশ করছি। তামিলদের জাতীয় নেতা প্রভাকরণ সম্পর্কে এই সত্য প্রকাশ করতে পেরে আমি আহ্লাদিত। তিনি একেবারে সুস্থ আছেন। গোটা বিশ্বের তামিল সম্প্রদায়কে এই খবর দিতে পেরে আমার খুব আনন্দ হচ্ছে। তাঁকে নিয়ে পদ্ধতিগতভাবে যে সকল গুজব রটানো হচ্ছিল, আশা করি এই খবর প্রকাশের পর তার অবসান ঘটবে। শিগগিরই তিনি তামিল জাতির মুক্তির জন্য একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন। গোটা বিশ্বের তামিলদের একজোট হয়ে তাঁকে সমর্থন করা উচিত।”
২০০৮-০৯ সালে তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে শেষ অভিযান শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কান সেনা। ২০০৯ সালের ১৮ মে সন্ধেবেলায় তামিল টাইগারদের শেষ বাহিনিকে কোনঠাসা করে ফেলেছিল শ্রীলঙ্কান সেনা। রাতে যুদ্ধ বন্ধ থাকলেও, পরেরদিন সকালে ফের হামলা শুরু করেছিল সেনা। খোদ প্রভাকরণের নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়েছিল তামিল টাইগাররা। সকাল সাড়ে নটা পর্যন্ত চলেছিল গুলির লড়াই। সকল তামিল টাইগারের মৃত্যুতে খতম হয়েছিল লড়াই। ম্যানগ্রোভের জঙ্গল থেকে মিলেছিল প্রভাকরণের দেহ। শনাক্তকরণের পরই তাঁর মৃত্যু ঘোষণা করা হয়। দেহটির সঙ্গে ছিল একটি ‘০০১’ লেখা লকেট, দুটি পিস্তল, একটি টেলিস্কোপ লাগানো টি৫৬ রাইফেল, একটি স্যাটেলাইট ফোন এবং বেশ কিছু ডায়াবেটিসের ওষুধ। উল্লেখ্য, মধুমেহ রোগ ছিল তামিল টাইগার নেতার।
Pleased to announce the truth about our Tamil national leader Prabhakaran. He’s fine.I’m very happy to announce this to the Tamil people all over the world. I hope this news will put an end to the speculations that have been systematically spread about him so far: Pazha Nedumaran pic.twitter.com/NYblumbybP
— ANI (@ANI) February 13, 2023
তবে, সত্যি সত্যিই প্রভাকরণের মৃত্যু হয়েছে কিনা, তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। শ্রীলঙ্কা সরকারের পাশাপাশি, এলটিটিই গোষ্ঠীর পক্ষ থেকেও প্রভাকরণের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু, তারপরও কয়েকটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী এবং সংবাদমাধ্যমের একাংশ দাবি করেছিল, ওই দিনের যুদ্ধে বেঁচে গিয়েছিলেন এই তামিল উগ্রপন্থী নেতা। সেখান থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়েছিলেন তিনি। ২০০৯ সালেই এক তামিল ওয়েবসাইটে প্রভাকরণের একটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল। ছবিতে দেখা গিয়েছিল, টিভিতে তিনি তাঁর মৃত্যু সংবাদ দেখছেন। কিন্তু, পরে প্রমাণ হয়েছিল যে ছবিটি ফটোশপের কারিকুরিতে তৈরি।
২০১০ সালে আবার এলটিটিই ঘনিষ্ঠ ওয়েবসাইট, তামিলউইন দাবি করেছিল, যে দেহটি শ্রীলঙ্কা সরকার প্রভাকরণের মৃতদেহ বলে দাবি করেছিল, সেই দেহটি আসলে শ্রীলঙ্কার এক সৈনিকের ছিল। প্রভাকরণের মতো চেহারা বলে, তাঁর দেহই তামিল নেতার দেহ বলে চালানো হয়েছিল। তামিলনাড়ুর রাজনীতিবিদ ভাইকোও একাধিকবার দাবি করেছেন, প্রভাকরণের বেঁচে আছেন এবং সঠিক সময়ে গোপন আস্তানা থেকে বেরিয়ে আসবেন। এদিনের অগ্রগতির পর, তামিলনাড়ুর কংগ্রেস প্রধান কেএস আলাগিরি বলেছেন, “আমি খুশি। যদি পি নেদুমারান আমাকে প্রভাকরণকে দেখাতে পারেন, তাহলে তার সঙ্গে দেখা করতে যাব। কোনও অসুবিধা নেই।”