Modi in Bhopal: দুর্নীতির গ্যারান্টি চাই কি, ঠিক করতে হবে দেশকে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
Modi in Bhopal: ভোপালে বিজেপির বুথ কমিটির প্রধানদের এক জনসভায় অংশ নিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। শুধু মধ্য প্রদেশের বিজেপির বুথ সমিতির প্রধানরা নন, গোটা দেশের বুথ কমিটির প্রধানরাই অংশ নিচ্ছেন এই সভায়।
ভোপাল: একদিনের সফরে মধ্য প্রদেশে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভোটমুখী মধ্য প্রদেশে এদিন সকালে রেলের এক কর্মসূচীতে অংশ নেন নরেন্দ্র মোদী। পাঁচটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরু করেন তিনি। এরপর, ভোপালে বিজেপির বুথ কমিটির প্রধানদের এক জনসভায় অংশ নিয়েছেন তিনি। শুধু মধ্য প্রদেশের বিজেপির বুথ সমিতির প্রধানরা নন, গোটা দেশের বুথ কমিটির প্রধানরাই অংশ নিচ্ছেন এই সভায়। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই সভায় তিনি বক্তৃতা দেবেন না, কর্মীদের প্রশ্নের জবাব দেবেন। কী কী প্রশ্নোত্তর চলল বিজেপির বুথ কর্মীদের সভায়? আসুন দেখে নেওয়া যাক –
- আপনাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে, আমার বিদেশ যাত্রার ধকলও কেটে গেল।
- পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশে মূল্যবৃদ্ধির অবস্থা মানুষের সামনে তুলে ধরুন। মানুষকে বোঝান, করোনা মহামারি সত্ত্বেও ভারতের অর্থনীতি বেশ ভাল অবস্থায় আছে। মোবাইল ডেটা, আয়ুষ্মান ভারতের মতো আমাদের বিভিন্ন নীতির ফলে মানুষের অনেক টাকা বেঁচেও যাচ্ছে। বিজেপি যে যে রাজ্যে ক্ষমতায় আছে, সব রাজ্যেই জ্বালানির দাম ১০০ টাকার নীচে রয়েছে। অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে কেন জ্বালানির দাম ১০০-র বেশি? মানুষের সামনে এই প্রশ্ন তুলুন।
- আজ আমিও একটা গ্যারান্টি দিচ্ছি। সব দুর্নীতিবাজ, সব চোরদের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা গরীব মানুষকে লুঠ করেছে, যারা দেশকে লুঠ করেছে, তাদের তো হিসেব দিতেই হবে। জেলের দরজা সামনে হলেই এরা এখন একজোট হচ্ছে। এদের কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম হল, দুর্নীতির তদন্ত থেকে রক্ষা পাওয়া।
- বিজেপির বুথ কর্মীরা এই দলগুলির দুর্নীতির তালিকা তৈরি করে মানুষের কাছে নিয়ে যান। এলাকায় এই দুর্নীতির তালিকার পোস্টার লাগান।
- ইদানিং বিরোধীরা একটা কথা খুব বলছে, গ্যারান্টি। এই গ্যারান্টি হল দুর্নীতির গ্যারান্টি। দিন কয়েক আগে বিরোধী দলের নেতারা ছবি তোলার একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল। সেখানে যারা ছিলেন, তাদের সব মিলিয়ে ২০ লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতি রয়েছে।
- বিরোধীরা যারা একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে, তাদের উপর রাগ নয়, দয়া করুন। এর আগে ২০১৯ সালেও আমরা শুনেছিলাম বিরোধী জোটের কথা। এবার একটু বেশি লাফালাফি করছে ওরা। আসলে এছাড়া ওদের কোনও উপায় নেই। ২০২৪ সালে আরও বেশি আসন জিতে ক্ষমতায় আসবে বিজেপি।
- এক পরিবারের একেক সদস্যের জন্য যদি পৃথক পৃথক আইন থাকে, তাহলে সেই সংসার চালানো যায়? একইভাবে দেশের একেক সম্প্রদায়ের জন্য যদি একেক আইন থাকে, তাহলে দেশ এগোতে পারে না। সংবিধানেও সকলের জন্য সমান আইনের কথা বলা আছে। সুপ্রিম কোর্টও ইউনিফর্ম সিভিল কোড আনার জন্য বারবার চাপ দেয়।
- তিন তালাকের পক্ষে যারা, তারা মুসলিম মহিলাদের সঙ্গে অন্যায় করছে। এর ক্ষতিকর প্রভাব শুধু মহিলাদের নয়, পুরুষদের উপরও পরে। কোনও মহিলাকে তিন তালাক দিয়ে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিলে তার বাবা-ভাইদের মনে কী প্রভাব পড়ে, তা ভেবে দেখুন। এটা যদি ইসলামের অপরিহার্য অংশ হয়, তাহলে মিশর, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, কাতারের মতো মুসলিম প্রদান দেশে কেন তিন তালাক নিষিদ্ধ করা হয়েছে?
- বিজেপি তুষ্টিকরণের রাস্তায় চলে না, চলে সন্তুষ্টিকরণের রাস্তায়। এই রাস্তা পরিশ্রমের। ঘাম ঝরাতে হয়।
- কিছু কিছু দল নিজেদের দলের উন্নতির জন্য কাজ করে। তাদের রাস্তা সহজ। তুষ্টিকরণ, ভোট ব্যাঙ্ক। কিন্তু, এর ফলে দেশের উন্নতি থমকে যায়। দেশে ভেদাভেদ বেড়ে যায়। কিন্তু, আমরা বিজেপির সংস্কার আলাদা, সংকল্প অনেক বড়। আমাদের অগ্রাধিকার দল নয়, দেশ। দেশের ভাল হলে, সবার ভাল হবে। তাই বিজেপি তুষ্টিকরণ, ভোটব্যাঙ্কের সহজ রাস্তায় চলে না। আমাদের রাস্তা দেশের মানুষকে পরিষেবা দেওয়া।
- আগে রান্নার গ্যাসের কানেকশন পেতে কত দৌড়ঝাঁপ করতে হত। উজ্জ্বলা গ্যাস যোজনার ফলে এই প্রক্রিয়া অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। মোদী আসায় গ্যাস পাওয়া কত সহজ হয়েছে, তা মানুষকে বোঝান। তুলনা দিয়ে বোঝালে মানুষের বেশি মনে থাকে। ফলে, পুরোনো পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করে আমাদের সরকারের সাফল্য তুলে ধরুন।
- সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের বুথ এলাকার একটি গ্রুপ তৈরি করুন। এর ফলে এলাকার বিধায়ক, সাংসদদের সঙ্গে সরাসরি সাধারণ মানুষ যুক্ত হতে পারবেন। নমো অ্যাপে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের খবর আছে। সেই সব খবর এই গ্রুপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিন।
- ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে উন্নত দেশে পরিণত করা আমাদের লক্ষ্য। তার জন্য এই ছোট ছোট কাজগুলি বুথ স্তরে করতে হবে। বুথ স্তরের বিজেপি কার্যকর্তাদের মানুষের নিত্যদিনের যাপনের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। তাহলেই আপনাদের বুথে বিজেপিকে শক্তিশালী হওয়া থেকে কেউ আটকাতে পারবে না।
- আমাদের সরকারের আমলে স্কুলছুটদের সংখ্যা দ্রুত হারে কমছে। তাও, বুথ কমিটির সদস্যরা চেষ্টা করুন, তাঁদের বুথ এলাকার মধ্যে যাতে একজনও স্কুলছুট না হয়। শিশুদের বই, খাতা, ইউনিফর্ম না থাকলে, সেগুলি কীভাবে তাদেরসহাতে তুলে দেওয়া যায়, তার ব্যবস্থা করুন।
- গ্রামে পরিচ্ছন্নতা, সৌরশক্তির ব্যবহার কীভাবে বাড়ানো যায়, সেই দিকে নজর দিন। বুথ এলাকার মধ্যে কতগুলি বাড়িতে সৌরশক্তি পৌঁছেছে, তার খেয়াল রাখুন। লক্ষ্য নিন, আরও বেশি বাড়িতে সৌরশক্তি পৌঁছে দেওয়ার।
- বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে পুরোনো পাঠ্যবই সংগ্রহ করুন। সেই সকল বই দরিদ্র শিশুদের মধ্যে বিতরণ করুন। এই ধরনের ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে বুথ এলাকার সকল মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।
- খবরের কাগজে সরকারের বিজ্ঞাপন ছাপা হয়। সেই সকল বিজ্ঞাপন গ্রামের কোনও একটি নির্দিষ্ট জায়গায় কেটে কেটে লাগিয়ে রাখুন। কাগজে বিজেপির যে সমস্ত ভাল খবর ছাপা হবে, সেগুলি কেটে কেটে লাগিয়ে রাখুন। মানুষ জানবে, সেখানে আসলেই খবর পাওয়া যাবে।
- বুথ রাজনৈতিক সংঘর্ষের জায়গা নয়। বুথ স্তরের কর্মীদের একমাত্র কাজ হল সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দান করা। পরিষেবা পেলেই মানুষ আপনাদের কাছে আসবে। সকলে মনে করবে বিজেপি কর্মীদের কাছে গেলেই কজ হবে।
- বুথ কমিটিই কোনও মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর আসল শক্তি। বুথ কমিটি থেকে আমরা মানুষের চাহিদা, অসুবিধা জানতে পারি। বুথ কমিটি আমায় না জানালে, হয়তো উজ্জ্বলা গ্যাস যোজনা শুরুই হত না।