ভোপাল: স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ভাল নয় অ্যালকোহল। কিন্তু, মধ্যপ্রদেশের নর্মদাপুরম জেলার কৃষকদের মতে, ডাল চাষের জন্য মদ যেন আশীর্বাদ। মুগ ডাল ছাড়াও কৃষকরা হলুদ ও আরও কয়েকটি ফসল চাষের জন্য মদ ব্যবহার করছেন। কৃষকদের মতে অ্যালকোহল একদিকে কীটনাশক, অন্যদিকে সার হিসেবেও কাজ করে। তবে, এই বিষয়ে কৃষি বিজ্ঞানীরা ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। সূত্রের খবর, অধিকাংশ কৃষক ১৫ লিটার জলে ১০০ মিলিলিটার দেশি মদ মেশাচ্ছেন। বীজ বপনের পর ওই মিশ্রন স্প্রে করছেন। ওই কৃষকদের দাবি, রাসায়নিক সারের থেকে দেশি মদ ভাল এবং সস্তা। কয়েকজন কৃষক তো এমনও দাবি করছেন যে মদে ফসলের গুণমানও ভাল হচ্ছে।
নর্মদাপুরমের কৃষকরা জানিয়েছেন, একর প্রতি কীটনাশক স্প্রে করার খরচ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। সেখানে দেশী মদ স্পের করতে একর প্রতি খরচ হয় মাত্র ১০ থেকে ১২ টাকা। বীজ বপনের ৪০ দিন পর ফসলে মদ স্প্রে করছেন তাঁরা। এই কৌশলে ফলনের পরিমাণ বাড়ার পাশাপাশি ফসলের গুণমানও উন্নত করে। তাই, বাজারে কোরোজেন, অ্যামিডা, অ্যাসিডা, থিওর মতো কীটনাশক থাকা সত্ত্বেও বহু কৃষক দেশি মদ বা মহুয়া জলে মিশিয়ে স্প্রে করছেন।
তবে, কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, অ্যালকোহলের ব্যবহারে ফসলের গুণমান উন্নত হয়, এমন কোনও প্রমাণ নেই। তবে দেশি মদ যে জমিতে কীটপতঙ্গ নির্মূল করতে সাহায্য করে, তা তাঁরাও স্বীকার করছেন। জওহরলাল নেহরু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ড. এসবি আগরওয়াল বলেছেন, “অ্যালকোহল মুগের গুণমান উন্নত করতে পারে, এর কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই, কোনও গবেষণাও হয়নি।”
তবে বিজ্ঞানের এই কচকচির মধ্যে ঢুকতেই চান না কৃষকরা। তাঁরা পাল্টা পরিসংখ্যান দেখাচ্ছেন। ২০২২-২৩ সালে, মধ্যপ্রদেশ সরকারে মুগ ডাল কেনার লক্ষ্য ছিল ২,৭৫,৬৪৫ মেট্রিক টন। শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকার কিনেছিল ৩.৫ লক্ষ মেট্রিক টন। লাভের মুখ দেখে কৃষকরা এবার আরও বেশি জমিতে মুগ ডাল চাষ করেছেন। রাজ্যে এখন প্রায় ১০.৭৯ লক্ষ হেক্টর জমিতে মুগ ডাল চাষ করা হয়েছে। গত বছর মুগ ডাল চাষ করা হয়েছিল ৯.২৯ লক্ষ হেক্টর জমিতে।