মুম্বই: সংক্রমণের প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতোই ফের একবার দেশে সংক্রমণের শীর্ষে উঠে এসেছে মহারাষ্ট্র (Maharashtra)। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনে (Omicron) আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখেও তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র। উদ্বেগজনক এই পরিস্থিতিতেও কিছুটা আশার আলো দেখছেন চিকিৎসক-গবেষকরা। কারণ মঙ্গলবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রে যে মোট ৫৭৮ জন ওমিক্রন আক্রান্ত রয়েছেন, তাদের মধ্যে কেবল একজনই গুরুতর অসুস্থ (Severely Ill)। আটজনের রয়েছে মাঝারি উপসর্গ (Moderate Symptom)। অর্থাৎ সংক্রমণ দ্রুতগতি ছড়ালেও, গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম ওমিক্রনে।
করোনার মতো ওমিক্রন সংক্রমণেও শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্রই। মঙ্গলবার রাজ্যে নতুন করে ৭৫ জন ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মেলায় মহারাষ্ট্রে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্য়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫৩-এ। রাজ্যজুড়ে সংক্রমণের যে ব্যপক বৃদ্ধি হয়েছে, তার জন্য ওমিক্রনকেই দায়ী করছেন চিকিৎসক-গবেষকরা। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রে যে মোট ৫৭৮ জন ওমিক্রন আক্রান্ত রয়েছেন, তাদের মধ্যে কেবল একজনই গুরুতর অসুস্থ। আটজনের রয়েছে মাঝারি উপসর্গ। ৫৭৮ জনের মধ্যে ৪৩৬ জনের কোনও উপসর্গই দেখা যায়নি, ১৩৩ জনের খুব সামান্য় উপসর্গ দেখা গিয়েছে।
সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়লেও, রোগীদের নিয়ে এখনই উৎকন্ঠিত হওয়ার কিছু নেই বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তথ্যে দেখা গিয়েছে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের মধ্যে মৃদু সংক্রমণই দেখা যাচ্ছে। তবে বয়সজনিত কারণে বা অন্য কোনও রোগের প্রভাবে আগামিদিনে সংক্রমণ গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে, এই আশঙ্কাকেও উড়িয়ে দিচ্ছেন না চিকিৎসকরা।
রাজ্যের সার্ভিলেন্স অফিসার ডঃ প্রদীপ আওয়াতে বলেন, “অধিকাংশ রোগীর মধ্যেই সংক্রমণের মৃদু উপসর্গ দেখা দিলেও, বয়সজনিত কারণে বা আগে থেকে শরীরে বাসা বাঁধা কোনও রোগের কারণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শারীরিক অবস্থা জটিল হয়ে যেতে পারে। সেই কারণেই ওমিক্রন ভ্য়ারিয়েন্টকে হালকাভাবে নিলে চলবে না। করোনা সংক্রমণ রুখতে যে প্রোটোকল ও নির্দেশিকাগুলি রয়েছে, তা কঠোরভাবে পালন করতেই হবে।”
ওমিক্রন আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই বিদেশ যাত্রী হওয়ায়, গত ১ নভেম্বর থেকে মহারাষ্ট্রে আগত সমস্ত বিদেশযাত্রীদের উপরই কড়া নজর রাখা হচ্ছে। বিমানবন্দর থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে এখনও অবধি মোট ২৩৯৭টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়েছে। ৯৯ জন বাদে বাকি সকলেরই রিপোর্ট এসে গিয়েছে।
সংক্রমিত হওয়ার পর রোগীদের নিয়ে খুব একটা উদ্বেগ না থাকলেও, ওমিক্রনের ভ্য়াকসিনকে ফাঁকি দিয়ে শরীরে প্রবেশের ক্ষমতাই চিন্তা বাড়াচ্ছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ৫৭৮ জন ওমিক্রন আক্রান্তের মধ্য়ে ৩৬৫ জনই টিকাপ্রাপ্ত। অর্থাৎ আক্রান্তদের মধ্যে ৬৩ শতাংশই টিকাপ্রাপ্ত। অন্যদিকে, টিকা নেননি, এমন ১৫৪ জনও ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন। ৫৯ জন টিকা নিয়েছেন কিনা, সে বিষয়ে এখনও জানা যায়নি।
তবে টিকাপ্রাপ্ত নন, এমন ১৫৪ জনের তালিকায় ১৮ অনুর্ধ্বও অনেকে রয়েছে। ৫৭৮ জনের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জনের বয়স ১০ বছরের নীচে, ৩২ জনের বয়স ১০ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। তবে বিগত দুই মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে চিকিৎসক-গবেষকরা এখনও ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনও বিষয় দেখছেন না বলেই জানিয়েছেন।