
নয়া দিল্লি: ‘বন্দি’ মন্ত্রী সরাতে সংশোধনী বিল নিয়ে আনছে কেন্দ্র। এই বিলের অর্থ, অভিযুক্ত হয়ে পুলিশ হেফাজতে গেলে অপসারণ করা হবে সংশ্লিষ্ট নেতা-মন্ত্রী কিংবা মুখ্যমন্ত্রীকেও। লোকসভায় ১৩০ তম সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করবেন অমিত শাহ। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। আগেই তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে সোচ্চার হয়েছেন। তিনি তোপ দেগেছেন, রাজ্য সরকারকে ফেলে দেওয়ার প্রচেষ্টা! মহুয়া মৈত্র তুলে ধরলেন আরও একটি পয়েন্ট! তাঁর কথায়, আসলে এই বিল তো কেবল বিরোধীদের অধিকার খর্বের নয়, বিজেপির শরিকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাঁর কথায়, “এটা কেবল বিরোধী পক্ষই নয়, বিজেপির মধ্যে, তাদের যাঁরা শরিক রয়েছেন, তাঁরাও যদি মোদী-অমিত শাহর কথা না শোনেন, তাহলে ঘ্যাচাং ফু! গলা কেটে নাও!”
মহুয়ার কথায় এই বিল আসলে সংবিধান তো বটেই, দেশের আইন ও বিচারব্যবস্থাকেও এড়িয়ে যাচ্ছে। কীভাবে, তারও ব্যাখ্যা দেন মহুয়াষ। তিনি বলেন, “যে কোনও জনপ্রতিনিধির সাত বছরের বেশি যদি সাজা হয়, আদালত দোষী সাব্যস্ত করে, তবে তাঁকে সরানো যাবে, এটাই সংবিধান বলে। যে কোনও নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী, বা যে কোনও নির্বাচিত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কেন্দ্র নিজের ইডি-সিবিআই-কে দিয়ে ভুয়ো মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করতে পারে। কিন্তু এই বিলটা কী করছে, ৩০ দিনের মধ্যে সেই মুখ্যমন্ত্রী কিংবা মন্ত্রীকে স্যাক করছে! তার মানে তো যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে পুরোপুরিভাবে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে।”
দ্বিতীয়ত, আইনি-বিচারব্যবস্থাকেও এই বিল এনে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মহুয়া। তাঁর কথায়, “কাউকে দোষী কিংবা নিরাপরাধ প্রমাণ একমাত্র আদালতই করতে পারে। সেটার জন্য অপেক্ষা না করে সরিয়ে দেবে।” দিল্লির প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মন্ত্রী সতেন্দ্র জৈনের উদাহরণও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “সতেন্দ্র জৈনকে চার বছর জেলে থাকতে হল, তারপর সিবিআই বলছে আমাদের কাছে কোনও প্রমাণ নেই।” মহুয়ার কথায়, “আজকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের কনভেনশন রেট ১ শতাংশ। ওরা যে কোনও কাউকে গ্রেফতার করে, ১০০ জনের মধ্যে ১ জন দোষী।”
উল্লেখ্য, বুধবার লোকসভায় নতুন বিল আনছে কেন্দ্রীয় সরকার। অভিযুক্ত হয়ে পুলিশ হেফাজতে গেলে অপসারণে বিল আনছে কেন্দ্র। লোকসভায় ১৩০ তম সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করবেন অমিত শাহ। নতুন সংশোধনী বিলের আওতায় প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী সকলেই পড়বেন। কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে কোনও সরকারের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী হন কিংবা যে কোনও মন্ত্রী যদি কোনও গুরুতর অপরাধে গ্রেফতার হন, টানা ৩০ দিন পুলিশ হেফাজতে থাকলেই এই আইন প্রযোজ্য হবে।