ফ্লোরিডা: কর্মসূত্রে বিদেশের মাটিতে সংসার পেতেছিলেন দম্পতি। জন্ম হয় সন্তানেরও। সুখের সংসারে যে এমন ‘অসুখ’ জমা হচ্ছে, তা বুঝতে বোধ হয় বেশ কিছুটা সময় লেগে গিয়েছিল তাঁদের। সম্পর্ক তখন প্রায় ভাঙার পথে। তার আগেই ঘটে যায় অঘটন। ২৬ বছরের জয় মেরিনকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছিল, তা স্বচক্ষে দেখেছিলেন তাঁর সহকর্মীরা। প্রথমে গাড়ির ভিতরে টেনে নিয়ে গিয়ে শরীরে বসানো হয় পরপর ধারাল অস্ত্রের কোপ। তার পর সেই রক্তাক্ত স্ত্রীকে রাস্তায় ফেলে, স্পিড ব্রেকারের মতো তাঁর ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন তাঁর স্বামী। সেই দৃশ্যের কথা বলতে গিয়ে শিউরে ওঠেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। জয়কে বাঁচানো যায়নি সেদিন। তবে তিন বছর পর শাস্তি পেলেন তাঁর স্বামী।
২০২০ সালের ঘটনা। কেরলের বাসিন্দা ওই দম্পতি থাকতেন আমেরিকার ফ্লোরিডায়। একটি হাসপাতালে নার্সের কাজ করতেন জয় মেরিন নামে ওই যুবতী। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই যুবতী সে দিন হাসপাতাল থেকে কাজ সেরে বেরচ্ছিলেন। গাড়ি নিয়ে হাসপাতালেরই পার্কি লটে অপেক্ষা করছিলেন তাঁর স্বামী ফিলিপ ম্যাথু। আচমকা গাড়িতে তুলে দরজা বন্ধ করে জানালার কাচ তুলে দেন ফিলিপ। গাড়ির ভিতরে পরপর ১৭ বার কোপ বসানো হয় বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীরা। ততক্ষণে ছুটে এসেছেন জয়ের সহকর্মীরা। তাঁদের সামনেই আহত জয়কে রাস্তায় ফেলে তাঁর ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে কার্যত পালিয়ে যান ফিলিপ।
পরবর্তীতে জয়ের এক সহকর্মী জানিয়েছিলেন, তাঁরা পৌঁছে দেখেন তখনও ধুঁকছেন জয়। কাঁদছেন আর বলছেন, ‘আমার এক সন্তান আছে।’ এরপর হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। স্ত্রীর মৃত্যুর পর দোষ স্বীকার করে নিয়েছিলেন ফিলিপ। তারপর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তিন বছর ধরে চলে মামলা। অবশেষে ফ্লোরিডার আদালত ফিলিপকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল সম্প্রতি। সন্তানের হত্যাকারী যে শাস্তি পেয়েছে, তাতেই সন্তুষ্ট জয়ের পরিবার।