নয়া দিল্লি: দেশকে বিশ্বগুরু করার লক্ষ্য নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু, বৃহস্পতিবার রাজধানী দিল্লি থেকে এমন এক ঘটনার খবর এল, যা শুনে মনে হতে পারে আধুনিক ভারতে নয়, আমরা বোধহয় রয়েছি মধ্যযুগে। ৭০,০০০ টাকা দিয়ে এক মহিলাকে কিনেছিল এক ব্যক্তি। হ্যাঁ, আলু-পটলের মতো মহিলার কেনাবেচা হয়েছিল। তারপর সেই মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন ওই ব্যক্তি। তবে, মহিলার ‘আচার-আচরণ’ তাঁকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। আর তাই সে ওই মহিলাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে এবং তারপর দেহটি দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির ফতেহপুর বেরির এক বনাঞ্চলে ফেলে দিয়েছে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ধর্মবীর। তাকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এই জঘন্য কাজে তাকে সহায়তা করার অভিযোগে, অরুণ এবং সত্যবান নামে আরও দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দক্ষিণ দিল্লির উপ-পুলিশ কমিশনার চন্দন চৌধুরী জানিয়েছেন, শনিবার সকালে তাঁদের কাছে একটি ফোন এসেছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন, ফতেপুর বেরির খুর্দ ঝিল সীমান্তের কাছে এক জঙ্গলে এক মহিলার দেহ পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছিল। এরপর, এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়। প্রযুক্তিভাবে এবং সাধারণভাবে নজরদারি চালানো হয়। শনিবার দুপুরেই একটি অটোরিকশার উপর পুলিশের সন্দেহ পড়েছিল। ঘটনাস্থলের এক সিসিটিভি ক্যামেরায় অটোরিকশাটিকে দেখা গিয়েছিল। সেটি কোন পথে চলাচল করেছে, সেই সম্পর্কে খোঁজ খবর লাগায় পুলিশ। অটোটির রেজিস্ট্রেশন নম্বরও শনাক্ত করা হয়। জানা যায়, অটোটির চালকের নাম অরুণ। সে, ছতরপুরের বাসিন্দা। গদাইপুর ব্যান্ড রোডের কাছ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
অরুণকে চেপে ধরতেই সে মৃতা মহিলাকে ধর্মবীরের স্ত্রী ‘সুইটি’ বলে শনাক্ত করে। ধরমবীর, অরুণের শ্যালক। তাকে জেরা করেই ধরমবীর এবং সত্যবানের খোঁজ পাওয়া যায়। তারা দুজনেই নাংলোইয়ের বাসিন্দা। অরুণ আরও জানায়, হরিয়ানা সীমান্তের কাছে এক জায়গায় সুইটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল ধরমবীর। তারপর, সুইটির দেহ জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। অরুণ আরও দাবি করে, সুইটি নাকি প্রায়শই কোনও খবর না দয়ে কয়েক মাসের জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতেন। এতেই রেগে গিয়েছিল ধর্মবীর। সে জানায়, সুইটির বাবা-মা বা পরিবারের কেউ আছে কিনা, তা তাদের জানা নেই। কারণ ধর্মবীর এক মহিলাকে ৭০,০০০ টাকা দিয়ে তাকে কিনেছিল।
এরপরই ধর্মবীর এবং সত্যবানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অরুণের অটোরিকশাটি দেহ লোপাটের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই মামলার বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সুইটিকে স্থানীয় রেলস্টেশনে নামিয়ে দেওয়ার অজুহাতে নিয়ে এসেছিল অভিযুক্তরা। সুইটিকে কোন মহিলা বিক্রি করেছিল এবং তাঁর পরিবারের কেউ আছে কিনা, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।