বেঙ্গালুরু: রক্তে লাল হয়ে গিয়েছে গোটা জামা, হাত থেকে তখনও টুপটুপ করে ঝরছে রক্ত(Blood)। কোনও কথাবার্তা নেই, সোজা থানার ভিতরে ঢুকে গেলে এক ব্যক্তি। শান্তভাবেই এক অফিসারের সামনে বসে জানালেন যে তিনি নিজের স্ত্রী ও শাশুড়িকে খুন (Murder) করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে যেন অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং গ্রেফতার (Arrest) করা হয়। তবে অভিযোগ লেখা তো দূরের কথা, গোটা ঘটনায় প্রায় আধ ঘণ্টা স্তম্ভিত হয়ে বসে রইলেন অফিসার। মঙ্গলবার এই ঘটনাটি ঘটেছে বেঙ্গালুরু(Bengaluru)-র সঞ্জীবনী নগরে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবি কুমার (৪২) নামক ওই ব্যক্তি মঙ্গলবার সকালে তাঁর ছেলেমেয়েদের স্কুলে ছাড়তে যান। বাড়ি ফেরেন ১০টা ১৫ মিনিট নাগাদ। এসেই স্ত্রী সুনীতা(৩৮)-র সঙ্গে বচসা শুরু করেন তিনি। জানা গিয়েছে, বিগত ছয় মাস ধরেই তাঁর সন্দেহ ছিল যে, স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টার সময়ও, বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করেছিলেন।
সন্তানদের স্কুল থেকে ছেড়ে দিয়ে আসার পরও তিনি একই বিষয় নিয়ে ঝগড়া শুরু করেন। হঠাৎই মেজাজ হারিয়ে মাটিতে পড়ে থাকা দাঁ তুলে নেন তিনি এবং স্ত্রীকে আক্রমণ করতে যান। সেই সময় বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন স্ত্রী সুনীতার মা সরোজাম্মা (৬০)। তিনি মেয়েকে বাঁচাতে যান। সেই সময়ই দাঁ চালানোয় তাঁর মাথায় আঘাত লাগে এবং তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
মায়ের পরিণতি দেখে সুনীতা আরও জোরে চিৎকার করতে থাকেন। এরপরই রবি কুমার একসঙ্গে স্ত্রী ও শাশুড়ির উপর লাগাতার কোপ বসাতে থাকেন। দীর্ঘক্ষণ স্ত্রী ও শাশুড়ি নিথর হয়ে পড়ে থাকার পর তাঁর হুঁশ ফেরে। এরপর বাড়িতে তালা মেরে থানার উদ্দেশে রওনা দেন।
সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট নাগাদ তিনি থানায় পৌঁছন। স্ত্রী-শাশুড়ির রক্ত মাখামাখি অবস্থা তাঁর, সেই অবস্থাতেই তিনি ওই থানার সাব-ইন্সপেক্টর নবীনের সঙ্গে দেখা করেন। টেবিলের উপর বাড়ির চাবি রাখেন এবং শান্ত গলায় গোটা ঘটনাটি খুলে বলেন। স্ত্রী ও শাশুড়িকে খুনের অপরাধে তাঁকে গ্রেফতার করার কথাও বলেন তিনি।
ওই ব্যক্তির কথা শুনে অবাক হয়ে যান সাব ইন্সপেক্টর। কোনওমতে নিজেকে সামলে তিনি উর্ধ্বতন কর্তাদের খবর দেন এবং রবি কুমারকে নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান যে রবি কুমার সত্যি কথাই বলছেন, মেঝেতে দুই মহিলার রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে।
জানা গিয়েছে, কর্নাটকের শিবমোগার বাসিন্দা রবি কুমার ১৮ বছর আগে সুনীতাকে বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তান রয়েছে, ছেলের বয়স ১৭ বছর এবং মেয়ের বয়স ৮ বছর। এর আগে তিনি নারকেল বিক্রি করতেন, সম্প্রতিই তিনি একটি বেকারিতে কাজ শুরু করেন। ওই ব্যক্তির সন্দেহ ছিল, তার স্ত্রীর সঙ্গে পাড়ার কয়েকজন পুরুষের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। এই নিয়ে বিগত ছয় মাস ধরে তাদের মধ্যে বচসাও চলছিল।
আরও পড়ুন: Bank Railway Privatisation: চাকরি হারাতে পারেন ৫ লক্ষ মানুষ! দাবি খোদ সাংসদের