Delhi: ‘ভেবেছিলাম মরেই যাব…’, রাজধানীর বুকে দুঃস্বপ্নের রাত মণিপুরি দম্পতির

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Dec 02, 2023 | 2:44 PM

Manipur Couple assaulted in Delhi: ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে, দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির সানলাইট কলোনি এলাকায়। জানা গিয়েছে, নৈশভোজের পর, পারিবারিক বন্ধুকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে এসেছিল ওই মণিপুরি পরিবার। তাঁদের কাছে সাহায্য চাওযার অছিলায়, মণিপুরি দুই মহিলাকে হেনস্থা করতে শুরু করেছিল দুই ব্যক্তি। তার প্রতিবাদ করাতেই...

Delhi: ভেবেছিলাম মরেই যাব..., রাজধানীর বুকে দুঃস্বপ্নের রাত মণিপুরি দম্পতির
পাশের বাড়ি থেকে মোবাইলে তোলা হয়েছে ঘটনার ভিডিয়ো
Image Credit source: Twitter

Follow Us

নয়া দিল্লি: গত মে মাস থেকে বিক্ষিপ্তভাবে হিংসা চলছে মণিপুরে। তার মধ্যেই রাজধানী দিল্লির বুকে আচমকা হামলার শিকার হলেন মণিপুরের এক ব্যক্তি এবং তাঁর স্ত্রী ও বোন। তাঁদের এক পারিবারিক বন্ধুকেও বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে, দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির সানলাইট কলোনি এলাকায়। জানা গিয়েছে, নৈশভোজের পর, পারিবারিক বন্ধুকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে এসেছিল ওই মণিপুরি পরিবার। তাঁদের কাছে সাহায্য চাওযার অছিলায়, মণিপুরি দুই মহিলাকে হেনস্থা করতে শুরু করেছিল দুই ব্যক্তি। তার প্রতিবাদ করাতেই তাদের বেধড়ক মারধর করে আট-নয়জন ব্যক্তি। শুক্রবার রাতে এই বিষয়ে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এফআইআর-এ যৌন হেনস্থার অভিযোগও করা হয়েছে। ঘটনার একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

নির্যাতনের শিকার দুই মণিপুরি ব্যক্তির একজন জানিয়েছেন, ওই রাতে তাঁরা এক রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। খাওয়ার পর, রাত ১১টা নাগাদ পারিবারিক বন্ধুকে বাড়ি পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন। সেই সময় দুই ব্যক্তি এবং এক মহিলা এগিয়ে আসেন। তাঁরা জানান, তাঁদের মোবাইলের ব্যাটারির চার্জ ফুরিয়ে গিয়েছে। তাই অ্যাপ ক্যাব বুক করতে পারছেন না। মুনির্কা যাওয়ার ক্যাব বুক করার জন্যই মণিপুরি ওই পরিবারের সহায়তা চেয়েছিল তারা। সাহায্য় করতে রাজিও হন তাঁরা। কিন্তু মণিপুরি ওই ব্যক্তি যখন ক্যাব বুক করছেন, সেই সময়ই সাহায্য চাইতে আসা দুজনের একজন, মণিপুরি দুই মহিলাকে লক্ষ্য করে অশালীন মন্তব্য করা শুরু করেছিলেন বলে অভিযোগ। তাদের সেই আচরণের প্রতিবাদ করতেই, তারা আগ্রাসী হয়ে উঠেছিল বলে জানিয়েছে মণিপুরি পরিবার। আট-নয়জন বন্ধুকে ফোন করে ডেকে আনে তারা। শুরু হয় প্রহার।

পাশের এক বাড়ির বারান্দা থেকে এক ব্যক্তি পুরো ঘটনাটি ক্যামেরা বন্দি করেছেন। সেই ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মণিপুরি ওই চারজনকে মাটিতে ফেলে পেটাচ্ছে একদল ব্যক্তি। তাদের ঘুষি মারা হচ্ছে, লাথি মারা হচ্ছে, মাটিতে ফেলে ঘষটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নির্যাতিত মণিপুরি ব্য়ক্তির স্ত্রীর অভিযোগ, তাঁর চুল ধরে টানা হয়েছে, লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তারা এমনভাবে মেরে চলেছিল, যে এক সময় তিনি ভেবেছিলেন বোধহয় মরেই যাবেন। তাদের পিটিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলা হবে। নির্যাতিত ব্যক্তির চোখ রক্ত জমে কালো হয়ে আছে, মুখ ফুলে গিয়েছে। অন্যদিকে, তাঁর স্ত্রীর হাঁটু ছড়ে গিয়েছে। সারা গায়ে মারের দাগ রয়েছে।


ওই এলাকার একটি সিসিটিভি ক্যামেরাতেও ঘটনার ছবি ধরা পড়েছে। তাতে হামলাকারীদের দুজনের মুখ স্পষ্ট দেখা গিয়েছে। এফআইআর-এ পুরো ঘটনার বিবরণ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ এবং পাশের বাড়ির বারান্দা থেকে তোলা ভিডিয়ো ফুটেজটিও জমা দিয়েছেন মণিপুরি ব্যক্তি। পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিয়ো ফুটেজগুলি দেখে তারা আততায়ীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। যে দুই ব্যক্তির মুখ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, তাদের আগে ধরা হবে। তাদের কাছ থেকেই বাকিদের সন্ধান পাওয়া যাবে বলে মনে করছে পুলিশ। তারা আরও জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পর, তারা প্রথমেই ওই মণিপুরি দম্পতিকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। ডাক্তাররা পরীক্ষা করে যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতে জানা গিয়েছে, তাদের উপর গুরুতর হামলা হয়েছে।

ঠিক কেন তাদের এইভাবে মারধর করা হল, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। মারধরের পর লুঠপাট করেনি দুষ্কৃতীরা। কাজেই ডাকাতির উদ্দেশ্য ছিল না। যৌন হেনস্থার অভিযোগ করা হলেও, ধর্ষণের মতো কোনও গুরুতর অপরাধ ঘটেনি। তাহলে কি এই অপরাধের পিছনে বিদ্বেষ রয়েছে? খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Next Article