
নয়া দিল্লি: জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর সমর্থন পেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক সর্বভারতীয় সংবাদপত্রকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের বিষয়ে ভারতের অবস্থানের প্রশংসা করেছেন তিনি। তবে, একই সঙ্গে দেশীয় রাজনীতির স্বার্থে বিদেশ নীতিকে ব্যবহার না করার বিষয়েও সতর্ক করেছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বিদেশ নীতি। দলীয় রাজনীতির জন্য কূটনীতি ব্যবহারে সংযত থাকা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ভারতের জি২০ সভাপতিত্ব নিয়ে তিনি বলেছেন, “আমার জীবদ্দশায় ভারতর জি২০ সভাপতিত্বের সুযোগ পেয়েছে বলে আমি খুবই আনন্দিত। জি২০ সম্মেলনের জন্য ভারতে বিশ্বনেতারা আসছেন, তার সাক্ষী হচ্ছি আমি। সর্বদাই ভারতের শাসন কাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল বিদেশ নীতি। আগের থেকে আজ দেশিয় রাজনীতিতে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক এবং গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বিদেশ নীতি। বিশ্বে ভারতের অবস্থান অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ইস্যু অবশ্যই হওয়া উচিত। তবে দলীয় বা ব্যক্তিগত রাজনৈতিক স্বার্থে, কূটনীতি এবং বিদেশ নীতি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সংযম থাকা সমান গুরুত্বপূর্ণ।”
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের বিষয়ে মোদী সরকারের কঠোর কূটনৈতিক অবস্থানের প্রশংসা করেছেন মনমোহন সিং। তিনি বলেছেন, “যখন দুই বা তার বেশি শক্তি কোনও সংঘাতে জড়ায়, তখন পক্ষ বাছাইয়ের জন্য অন্যান্য দেশের উপর প্রচুর চাপ থাকে। আমার মতে, শান্তির জন্য আবেদন করার পাশাপাশি আমাদের সার্বভৌম এবং অর্থনৈতিক স্বার্থকে প্রথমে রেখে ভারত সরকার সঠিক কাজ করেছে। জি২০-কে কখনই নিরাপত্তা-সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তির ফোরাম হিসেবে কল্পনা করা হয়নি। নিরাপত্তাজনিত সমস্যাকে দূরে সরিয়ে রেখে, জলবায়ু পরিবর্তন, সামাজিক বৈষম্য এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নীতিগত সমন্বয়ের উপর নজর রাখা গুরুত্বপূর্ণ।”
জি২০ বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। মনমোহন সিং জানিয়েছেন, চিনা প্রেসিডেন্টের এই সম্মেলনে যোগ না দেওয়াটা ‘দুর্ভাগ্যজনক’। ভারতের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নেবেন বলে আশা করেন তিনি। বর্তমান সরকারকে এই বিষয়ে তিনি কোনও পরামর্শ দিতে চান না।
ভারতের সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলি রয়েছে, সেগুলি নিয়ে তিনি ‘চিন্তিত নন, বরং আশাবাদী’ বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তবে, তার জন্য বৈচিত্র্যের উদযাপন করা উচিত। চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যের জন্য তিনি ইসরোরও প্রশংসা করেছেন। প্রসঙ্গত তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীনই চন্দ্রযান ১ অভিযান সফল হয়েছিল। চন্দ্রযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছনোয় তিনি ‘রোমাঞ্চিত’ বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।