নয়া দিল্লি: শুক্রবার দিল্লির ভারত মণ্ডপমে শুরু হল TV9 নেটওয়ার্কের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘হোয়াট ইন্ডিয়া থিংকস টুডে’। সম্মেলনের প্রথম দিনেই উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। TV9 নেটওয়ার্কের এমডি ও সিইও বরুণ দাসের বক্তব্য দিয়ে সম্মেলনের সূচনা হয়। প্রধানমন্ত্রীর ‘বিকশিত ভারত’-এর লক্ষ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাম্প্রতিককালে TV9 নেটওয়ার্ক যে সব উদ্যোগ নিয়েছে, সেগুলি সম্মেলনে এদিন উল্লেখ করেন বরুণ দাস।
এদিন বক্তব্যের শুরুতে বরুণ দাস বলেন, “আমরা জানি মোদীজির মূল লক্ষ্য হল, ইন্ডিয়া ফার্স্ট। ২০৪৭-এর মধ্য়ে ‘বিকশিত ভারত’-এর সেই লক্ষ্যপূরণ করতে মূলত তিনটি ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমটি হল, ভারতের যুবশক্তি। দ্বিতীয় বিষয় হল, ভারতের নারীশক্তি ও তৃতীয়টি হল, প্রবাসী ভারতীয়।”
নারী শক্তি সম্পর্কে এমডি বরুণ দাস বলেন, “আমি মনে করি সমাজের সব ক্ষেত্রে মূল ভিত্তি হওয়া উচিত নারী ক্ষমতায়ন ও নারী নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন।” এরপর বরুণ দাস জানান, প্রবাসী ভারতীয়দের কথা মাথায় রেখে, গত বছর TV9 নেটওয়ার্ক ‘নিউজ নাইন গ্লোবাল সামিটে’র আয়োজন করা হয়েছিল জার্মানিতে। তিনি বলেন, “চলতি বছরের অক্টোবরে ফের সেই সম্মেলন হবে আরও বড় আকারে। আমেরিকা ও আরব আমিরশাহীর কথা ভাবা হয়েছে সম্মেলনের জন্য। আমাদের চেয়ারম্যান রামেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বে বিশ্বে নেটওয়ার্কের বিস্তার বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ এটি।” এবার সম্মেলনের সম্প্রচারের জন্য বিশ্বের পাঁচ শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানান বরুণ দাস। তিনি বলেন, “লন্ডন, আবু ধাবি, মিউনিখ, মেলবোর্ন ও প্যারিসে এই সম্মেলনের সম্প্রচার করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার জন্য সেখানে জড়ো হয়েছেন প্রবাসীরা।”
এরপর আসে যুবশক্তির কথা। এ সম্পর্কে বরুণ দাস বলেন, “আমরা দেখেছি, যখনই প্রধানমন্ত্রী শিশুদের সঙ্গে দেখা করেন, তখনই এক অন্য রসায়ন তৈরি হয়। আমি তখন ভাবি, প্রধানমন্ত্রী শিশুদের বেশি ভালবাসেন, নাকি শিশুরা প্রধানমন্ত্রীকে বেশি ভালবাসে।” এই প্রসঙ্গে ফুটবল নিয়ে TV9 নেটওয়ার্কের কথা মনে করিয়ে দেন বরুণ দাস। তিনি বলেন, “৯ মাস আগে ন্যাশনাল স্কাউটিং প্রোগ্রাম শুরু করেছিলাম। অনেকে ভাবেন ফুটবলই বেছে নেওয়া হল কেন। এই ক্ষেত্রে আমি স্বামী বিবেকানন্দের থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, গীতাপাঠ করার থেকে ফুটবল খেললে স্বর্গের কাছাকাছি যাওয়া যায়। আজ সেই ফুটবলাররা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পেরেছে, আশীর্বাদও নিয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে বরুণ দাস বলেন, মোদী সবসময় বলেন, “ইন্ডিয়া ফার্স্ট। কখনও বলেন না ইন্ডিয়া ওনলি। মোদীর কথা আবারও বিবেকানন্দের কথা মনে করিয়ে দেয়। তিনিও স্বচ্ছতার সঙ্গে কথা বলতেন। সবার মনে থাকবে তিনি শিকাগোতে কী বলেছিলেন। বিবেকানন্দ ছিলেন প্রথম ভারতীয় যিনি গোটা বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন ভ্রাতৃত্বের বার্তায়।”
এমডি-সিইও বরুণ দাস আরও বলেন, “আমি মনে করি গ্রেট লিডারদের মধ্যে তিনটি গুণ থাকে। এক হল, বুদ্ধিমত্তা। যাতে, তাঁরা অতীত ও বর্তমান দেখে তারা ভবিষ্যতটাও আঁচ করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, এঁরা সবাই হৃদয় দিয়ে কথা বলেন। তৃতীয়ত, বিশ্বের ভাল কিসে হবে, কী করা উচিত, সেই বোধ থাকে তাঁদের।” ভারতকে সবাই ‘ইউনিভার্সাল ফ্রেন্ড’ বা ‘বিশ্ববন্ধু’ বলে উল্লেখ করে, সে কথাও মনে করিয়ে দেন বরুণ দাস। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবথেকে প্রশংসিত রাষ্ট্রনেতা। সব শেষে নেপোলিয়ন বোনাপার্টের উক্তি উল্লেখ করে বরুণ দাস বলেন, The heart of a statesman must be in his head।