ইম্ফল: মে মাসের গোড়াতে শুরু হয়েছিল অশান্তি। চার মাস পরও হিংসার আগুন নিভছে না মণিপুরে(Manipur Violence)। অশান্তি রুখতে একাধিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার, কিন্তু সুরাহা মিলছে না কিছুতেই। এরইমাঝে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের (Rajnath Singh) সঙ্গে দেখা করলেন মণিপুরের মেতেই জনগোষ্ঠীর (Meitei) প্রতিনিধিরা। সূত্রের খবর, মণিপুর থেকে অসম রাইফেলস (Assam Rifles) বাহিনীকে সরানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
মধ্য়রাতে মেতেই জনগোষ্ঠীর তরফে একটি বিবৃতি পেশ করে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেছে দিল্লি মেতেই কো-অর্ডিনেটিং কমিটি। তারা মণিপুর থেকে অসম রাইফেলস প্রত্যাহারের দাবি জানান। তাদের অভিযোগ, অসম রাইফেলস নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে না। কুকি ও মেতেই-দের সঙ্গে সমান ব্যবহার করছে না অসম রাইফেলস। কুকি জনগোষ্ঠীর হাতে তাদের প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। পাশাপাশি নারকো-টেররিজম, অনুপ্রবেশকারীর মতো সমস্যার কথাও তুলে ধরা হয়েছে। কুকি জনগোষ্ঠী মণিপুরের হিংসা মেটাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হয়ে দেশের জন্য ‘লজ্জা’ বয়ে এনেছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
মেতেইদের অভিযোগ, কুকি জনগোষ্ঠীর সদস্যরা পাহাড় থেকে হামলা চালাচ্ছে। তাদের গুলিতে বহু কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এরপরও কুকিদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, এর আগে মেতেই জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা কমপক্ষে তিনবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। মণিপুরে মেতেই মহিলারা এর আগে একাধিকবার অসম রাইফেলস বাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
অন্যদিকে, কুকি জনগোষ্ঠী আবার মণিপুর পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছে। রাজ্য়ে শান্তি বজায় রাখতে তারা অসম রাইফেলস মোতায়েন রাখার অনুরোধ করেছে।
প্রসঙ্গত, মণিপুরে অশান্তি রুখতে মোতায়েন থাকা অসম রাইফেলস সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকার, মণিপুর পুলিশ ও মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের কাছে রিপোর্ট জমা দেন। গত মাসেই অসম রাইফেলস এক মণিপুরী নেতাকে কুকি জনগোষ্ঠীর দুষ্কৃতীদের পক্ষ নেওয়ার অভিযোগে আইনি নোটিস পাঠিয়েছিল।
মণিপুরে গত মে মাস থেকে শুরু হওয়া কুকি-মেতেই জনগোষ্ঠীর সংঘর্ষে এখনও অবধি কমপক্ষে ১৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়া হয়েছেন ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ।