
আনুষ্ঠানিকভাবে ‘আদি কর্মযোগী অভিযান’ শুরু করল আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রক। তৃণমূল স্তরে আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য এই উদ্যোগ। লক্ষ্য আদিবাসী সম্প্রদায়কে ক্ষমতায়ন করা, প্রতিক্রিয়াশীল শাসনব্যবস্থা মজবুত করা এবং স্থানীয় নেতৃত্ব গড়ে তোলা। এই অভিযান যেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা প্রচেষ্টা, সবকা বিশ্বাস’-এর প্রতিফলন। ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারত নির্মাণের লক্ষ্যে এই অভিযান।
আদি কর্মযোগী অভিযানের মূল উদ্দেশ্যগুলি হল-
১। গ্রাম ও সম্প্রদায় পর্যায়ে প্রতিক্রিয়াশীল ও জনগণকেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা প্রচার করা।
২। গভর্ন্যান্স ল্যাব ও প্রসেস ল্যাব-এর মাধ্যমে ১০ জুলাই, ২০২৫ থেকে রাজ্য, জেলা, ব্লক ও গ্রাম স্তরে বহু-বিভাগীয় কর্মশালা পরিচালনা করে মাস্টার ট্রেইনারদের ক্ষমতা বৃদ্ধি।
৩। উন্নয়ন পরিকল্পনা যৌথভাবে প্রণয়ন, যেখানে আদিবাসী সম্প্রদায় ও সরকারি আধিকারিকরা একসঙ্গে তৈরি করবেন ‘এক লক্ষ আদিবাসী গ্রাম – ভিশন ২০৩০’, যাতে বিশদ কর্মপরিকল্পনা ও বিনিয়োগ কৌশল অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
৪। ৩০টি রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫৫০ জেলায় ২০ লক্ষ নেতাদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, যারা উন্নয়ন কার্যক্রমকে বাস্তবায়ন করবেন।
আদি সেবা কেন্দ্র: সব আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে প্রস্তাবিত, যেখানে সরকারি আধিকারিক ও গ্রামবাসী প্রতি পাক্ষিকে ১–২ ঘণ্টা “আদি সেবা সময়” দেবেন – স্থানীয় সমস্যা সমাধান, যুবসমাজকে পরামর্শ এবং শাসন উদ্যোগে সহায়তার জন্য।
গভর্ন্যান্স ল্যাব কর্মশালা: রাজ্য থেকে গ্রাম পর্যন্ত বহু-বিভাগীয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আদিবাসী উন্নয়নের সমাধান যৌথভাবে তৈরি।
আদিবাসী গ্রাম কর্মপরিকল্পনা: গ্রামবাসী ও আধিকারিকরা যৌথভাবে তৈরি করবেন ট্রাইবাল ভিলেজ ভিশন ২০৩০, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।
কারা করেন এই কাজ?
আদিবাসী উন্নয়নের লক্ষ্যে এই উদ্যোগকে বাস্তবায়িত করে তুলতে প্রয়োজন স্বেচ্ছাসেবকের। যারা পরিচিত হবেন –
আদি সহযোগী (Adi Sahyogi): শিক্ষক, চিকিৎসক ও পেশাজীবীরা যারা সম্প্রদায়কে দিকনির্দেশ ও সক্রিয় করবেন।
আদি সাথী (Adi Saathi): স্বনির্ভর গোষ্ঠী (SHG), এনআরএলএম সদস্য, প্রবীণ, যুবক ও স্থানীয় নেতারা, যারা বাস্তবায়ন ও প্রচারে সহায়তা করবেন।
সম্প্রদায় নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ: আদিবাসী যুবক-যুবতী, নারী ও নেতাদের জন্য শাসনব্যবস্থা, সমস্যা সমাধান ও সামাজিক গতিশীলতা নিয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচি।
১ লাখেরও বেশি আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে পৌঁছোবে এই অভিযান। যা ছড়িয়ে রয়েছে ৫৫০ জেলায়। গড়ে তোলা হবে ২০ লাখ নেতা। যারা পরবর্তীতে কাজ করে চলবেন উন্নয়নের লক্ষ্যে।
মাননীয় আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রী জুয়াল ওরাম এই বিষয়ে বলেন, “আদি কর্মযোগী অভিযান অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ও মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। সেবা, সংকল্প ও সমর্পণের মাধ্যমে এবং আদিবাসী সম্প্রদায় ও সরকারি আধিকারিকদের যৌথ প্রচেষ্টায় আমরা গড়ে তুলব ১ লাখ আদিবাসী গ্রামের ভিশন ২০৩০।”
মাননীয় আদিবাসী বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দুর্গা দাস উইকেয় বলেন, “এই উদ্যোগ তৃণমূল স্তরে আদিবাসী উন্নয়নে রূপান্তরমূলক ভূমিকা রাখবে এবং মিশন মোডে আদিবাসী গ্রামগুলোর সামগ্রিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।”
আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রকের সচিব বিভূ নায়ার জোর দিয়ে বলেন, “আদি কর্মযোগী অভিযান তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিক্রিয়াশীল শাসনব্যবস্থা চালু করার জন্য তৈরি। গভর্ন্যান্স প্রসেস ল্যাবের মাধ্যমে সরকারি আধিকারিকরা কাঠামোবদ্ধ প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন, যা তাঁদের কার্যকর নেতা হতে সাহায্য করছে।”