মুম্বই: মা-বাবা দুজনেই রাষ্ট্রদূত। তাদের সঙ্গেই মুম্বইয়ের ন্যারিম্যান হাউসে এসেছিল ২ বছরের মোসে হল্টজ়বার্গ (Moshe Holtzberg)। তাঁকে দেখভালের জন্য সঙ্গে ছিলেন একজন পরিচারিকা, যিনি ভারতীয়। ক্যালেন্ডারে তারিখটা ছিল ২৬ নভেম্বর, ২০০৮। বাকি পাঁচটা দিনের মতোই শুরু হয়েছিল সকালটা, কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বদলে গিয়েছিল গোটা পরিস্থিতি। হঠাৎ কানে এসেছিল একের পর এক গুলির শব্দ। বন্ধ দরজার ওপার থেকেই বোঝা গিয়েছিল, বাইরে ভয়ঙ্কর কিছু একটা হচ্ছে। ২০০৮ সালের ২৬ নভেমন্বর, এই অভিশপ্ত দিনেই মুম্বইয়ে হামলা (26/11 Mumbai Attack) চালিয়েছিল পাকিস্তানের লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি সংগঠন। আরব সাগরের পথ ধরে মুম্বইয়ে পৌঁছেই তাজ হোটেল, ন্যারিম্যান হাউস, হাসপাতাল সহ একাধিক জায়গায় হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। এই হামলাতেই প্রাণ হারিয়েছিস মোসে হল্টজ়বার্গের মা-বাবা র্যাবি গাব্রিয়েল হল্টজ়বার্গ ও রিভকা হল্টজ়বার্গ। একরত্তি মোসের পরিচারিকা সান্দ্রাই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বাঁচিয়েছিলেন তাঁকে। মুম্বই হামলার ১৪ বছর পর সেই দিনেরই স্মৃতিচারণ করলেন মোসে হল্টজ়বার্গ।
মুম্বই হামলার দিন ঠিক কী হয়েছিল, তা মনে নেই মোসের। কারণ সেই সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র দুই। তবে আবছা মনে আছে, কীভাবে তার ন্যানি (পরিচারিকা) সান্দ্রা হামলার সময় কোলে আঁকড়ে ধরেছিল তাঁকে, জঙ্গিদের গুলি থেকে বাঁচিয়েছিল। মুম্বই হামলায় যারা কোনও প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন ইজরায়েলের নাগরিক মোসে হল্টজবার্গ। বর্তমানে ১৬ বছরের কিশোর মোসে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সন্ত্রাসবাদ রোখার পক্ষে সওয়াল তুলে বলেন, “আমাকে যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, তার মধ্যে দিয়ে যেন অন্য কাউকে যেতে না হয়।”
বৃহস্পতিবারই ইজরায়েলের জেরুজালেমে মুম্বইয়ের সন্ত্রাসবাদী হামলায় নিহত মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করতে প্রার্থনাসভার আয়োজন করেছিলেন মোসে ও তাঁর পরিবারের বাকি সদস্য়রা। পিটিআই-কে দেওয়া একটি রেকর্ডেড বার্তায় মোসে মুম্বই হামলার দিনের কথা মনে করেন, কীভাবে তাঁর ন্যানি সান্দ্রা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে তাঁকে বাঁচিয়েছিল, সে কথাও উল্লেখ করেন মোসে। হামলায় মা-বাবাকে হারানোর পর ইজরায়েলে ফিরে যান মোসে। সেখানে তাঁর ঠাকুর্দা-ঠাকুমা র্যাবি সাইমন ও ইয়াহুদ রোসেনবার্গের কাছেই বড় হন মোসে।