Mudhol Hound: ছিল শিবাজীর প্রিয়! মোদীর নিরাপত্তা থাকা সেই ভয়ঙ্কর দেশি কুকুর এবার বর্ডারে

BSF: এই মুধল হাউন্ডের ইতিহাস অনেক পুরোনো। একসময় দাক্ষিণাত্যের রাজাদের শিকারের সঙ্গী ছিল তারা। মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কান পাতলে আজও শুনতে পাওয়া যায় বেশ কিছু লোককথা। শোনা যায় এই কুকুরগুলি শিবাজীর বড় ছেলে সম্ভাজির জীবন রক্ষা করেছিল।

Mudhol Hound: ছিল শিবাজীর প্রিয়! মোদীর নিরাপত্তা থাকা সেই ভয়ঙ্কর দেশি কুকুর এবার বর্ডারে
চিনে নিন এই ভয়ঙ্কর কুকুরকে Image Credit source: Social Media

Nov 10, 2025 | 7:31 PM

কলকাতা: ল্যাব্রাডর, জার্মান শেফার্ড, বেলজিয়ান ম্যালিনয়েস– নামগুলি শুনলেই বুকে কেমন ভয় ধরে না! এতদিন ভারতীয় সেনার সর্বক্ষণের সঙ্গী থেকেছে এই সব বিদেশি প্রজাতির কুকুরগুলি। এদের সাহস, আনুগত্য বরাবরই বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছে আমাদের দেশের বীর জওয়ানদের। কিন্তু জানেন, বিশ্বজোড়া নামডাকের এই সব সারমেয়দের সঙ্গে এখন সেনার সঙ্গী দেশি কুকুরও! শুনতে অবাক লাগছে নিশ্চয়! কিন্তু,অনেকদিন হয়ে গেল এরা খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বেও মোতায়েন রয়েছে। এবার দেশের সীমান্ত সুরক্ষাতেও মাঠে নামছে। কথা হচ্ছে, মুধল হাউন্ডদের নিয়ে। 

এদের শরীরের গঠনই এদের করেছে বাকিদের থেকে এক্কেবারে আলাদা। অনেকেই আবার এদের ক্যারাভান হাউন্ড নামেও ডাকেন। কেউ আবার পশমি হাউন্ড, কাঠেওয়ার কুকুর, কাঠেভার, সাইট হাউন্ড নামে ডাকেন। চটপটে, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, লম্বাটে চেহারার এই বিশেষ ক্ষমতাশালী কুকুরগুলির গতি প্রতি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটারেরও বেশি। প্রায় তিন কিলোমিটারেরও বেশি দূর থেকে যে কোনও বস্তুর গন্ধ শুঁকতে এই প্রজাতির কুকুরদের জুড়ি মেলা ভার। শিকারের সহজাত ক্ষমতাই এদের বাকি কুকুরদের থেকে একেবারে আলাদা করে দেয়। এদের শক্ত চোয়ালে একবার আটকে গেলে মুক্তি পাওয়া কার্যত অসম্ভব। অনেক বিশেষজ্ঞই বলেন, যে কাজ জার্মান শেফার্ডের করতে প্রায় ৯০ সেকেন্ড লাগে তা মুধল হাউন্ডের করতে মাত্র ৪০ সেকেন্ড লাগে। পাশাপাশি এদের আনুগত্যও এক্কেবারে দেখবার মতো। 

কী বলছে ইতিহাস? 

তবে এই মুধল হাউন্ডের ইতিহাস অনেক পুরোনো। একসময় দাক্ষিণাত্যের রাজাদের শিকারের সঙ্গী ছিল তারা। মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কান পাতলে আজও শুনতে পাওয়া যায় বেশ কিছু লোককথা। শোনা যায় এই কুকুরগুলি শিবাজীর বড় ছেলে সম্ভাজির জীবন রক্ষা করেছিল। তাই তাদের প্রতি শিবাজীর অনুরাগও অনেক বেড়ে যায়। তিনিই তাঁর বাহিনীতে এই প্রজাতির কুকুর ব্যবহার করেছিলেন। এও শোনা যায়, কর্ণাটকের মুধলের শেষ রাজা মালোজি রাও ঘোরপাড়ে স্থানীয় হাউন্ড ও মধ্য এশিয়ার গ্রেহাউন্ডের মধ্যে ক্রস-ব্রিড করে এই জাতটিকে উন্নত ও জনপ্রিয় করে তোলেন। এই জাতের এক জোড়া কুকুরছানা তৎকালীন ব্রিটিশ রাজা পঞ্চম জর্জকে উপহার দিয়েছিলেন, যার ফলে এই জাতটি আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি লাভ করে। 

আজ থেকে প্রায় বছর পাঁচেক আগে আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যে দেশীয় পোষ্যের কথাও বলতে শোনা গিয়েছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। মন কি বাত অনুষ্ঠানে মোদীর মুখে মুধল হাউন্ড আর হিমাচলি হাউন্ডের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা শোনা যায়। উঠে এসেছিল রাজাপালায়াম, কান্নি, ছিপ্পিপারাই আর কোম্বাই প্রজাতির কুকুরদের কথাও। কয়েক বছর আগে তো প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষায় থাকা স্পেশ্যাল প্রোটেকশন গ্রুপ বা এসপিজি-তেও চলে আসে দুই মুধল হাউন্ড। এবার বিএসএফ ১৫০টি মুধল হাউন্ডকে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেছে। উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রীও। এবার বর্ডারে মাদক ও বিস্ফোরক শনাক্তকরণের পাশাপাশি নিখোঁজ ব্যক্তি বা সন্দেহভাজনদের খুঁজে বের করার কাজেও দাপিয়ে কাজ করবে এই মুধোল হাউন্ড। সঙ্গে অতন্দ্র প্রহরীর মতো পাহারার দায়িত্ব তো থাকছেই।