
মুম্বই: কাকুতি-মিনতি করেও পার পেলেন না, ভারতে আসতেই হচ্ছে ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী তাহাউর রানাকে। আমেরিকা থেকে তাঁকে ভারতে আনা হচ্ছে। বুধবারই তাঁকে নিয়ে বিশেষ বিমান রওনা দিয়েছে। ভারতে পা রাখা মাত্রই তাঁকে এনআইএ-র বিশেষ আদালতে তোলা হতে পারে।
সূত্রের খবর, বুধবার সন্ধ্য়া ৭ টা ১০ মিনিট নাগাদ এনআইএ-র টিম তাহাউর রানাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের দিল্লিতে অবতরণ করার কথা। আপাতত তিহাড় জেলেই রাখা হবে মুম্বই হামলার চক্রীকে। দিল্লিতে এনআইএ-র বিশেষ আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে শুনানি হবে।
জানা গিয়েছে, দিল্লিতে পা রাখা মাত্র এনআইএ তাহাউরকে অফিসিয়ালি গ্রেফতার করবে। ইতিমধ্যেই তিহাড় জেলে নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থাও করা হয়েছে রানাকে রাখার জন্য। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই মামলার শুনানি দিল্লিতে হবে, মুম্বই নিয়ে যাওয়া হবে না তাহাউরকে।
এমনকী, আজ যদি দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্টে তাঁকে পেশ করা হলেও, তা ভার্চুয়ালিই করা হবে। একান্তই সশরীরে পেশ করতে হলে, বিচারকের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে তাহাউরকে, কারণ মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষে আজ আদালত বন্ধ।
তাহাউর রানাকে আমেরিকা থেকে ভারতে ফেরানোর পুরো কর্মকাণ্ডে নজর রাখছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। এছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক প্রতি মিনিটের আপডেট নিচ্ছে।
পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত তাহাউর রানা ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ের তাজ হোটেল সহ একাধিক জায়গায় হামলার অন্যতম চক্রী। ১০ জন পাকিস্তানি জঙ্গি সমুদ্রপথে ভারতে ঢুকে মুম্বইয়ের বিভিন্ন জায়গায় প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছিল। মোট ১৬৬ জন মারা যান ওই হামলায়। একমাত্র কাসব নামক এক জঙ্গিকেই ধরা গিয়েছিল। পরে দীর্ঘদিন তাঁকে জেলবন্দি রাখা হয় এবং শেষে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়।
মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন ডেভিড হেডলি। এই হেডলিকেই বিভিন্ন তথ্য ও নথি দিয়ে সাহায্য করেছিলেন তাহাউর রানা। মুম্বই হামলার আগে রেইকিও করে গিয়েছিলেন তাহাউর। ২০০৮ সালের ১১ থেকে ২১ নভেম্বরের মধ্যে মুম্বইয়ে ছিলেন রানা। পাওয়াইয়ের হোটেল রেনেসাঁতে থেকেছিলেন। সেখান থেকেই হামলার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি হয়েছিল।
দীর্ঘদিন ধরেই আমেরিকায় জেলে বন্দি ছিলেন তাহাউর। ভারত বহু প্রচেষ্টা করেছে তাঁকে দেশে আনার। সম্প্রতিই, ফেব্রুয়ারি মাসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে তাহাউরকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে। প্রত্যর্পণ রুখতে রানা আবেদন করলেও, মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।