
নয়া দিল্লি: ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর। গোটা মুম্বই শহরকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল লস্কর জঙ্গিরা। একের পর এক জায়গায় বিস্ফোরণ, নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়েছিল সাধারণ মানুষকে। মুম্বই হামলার ১৭ বছর পর ভারত সরকার হাতে পেল ওই হামলার মূল চক্রী তাহাউর রানাকে। ভারতে পা রাখা মাত্রই তাহাউরকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। চলছে জেরা। ইতিমধ্যেই এক রহস্যজনক ব্যক্তি সামনে এসেছে। মুম্বই হামলার আগে দুবাইয়ে এই রহস্যজনক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেছিলেন তাহাউর। তিনি মুম্বই হামলার সম্পর্কে সব কিছু জানতেন। এআইএ বর্তমানে দুবাইয়ের ওই রহস্যজনক ব্যক্তি কে ছিলেন, তা উদ্ধার করার চেষ্টা করছে।
এনআইএ মনে করছে, তাহাউরকে জেরা করেই মুম্বই হামলার অনেক অজানা সূত্র সামনে আসবে। ভারতের ইতিহাসে সবথেকে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসবাদী হামলা ছিল মুম্বইয়ের ২৬/১১ হামলা। এই হামলায় দুবাই যোগ খুঁজতেই মরিয়া এনআইএ।
মার্কিন তদন্তকারী সংস্থার ভারত সরকারকে যে রিপোর্ট দিয়েছিল, তা থেকেই জানা গিয়েছে, দুবাইয়ের এক রহস্যজনক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেছিলেন তাহাউর। মুম্বইয়ে কোথায়, কখন হামলা করা হবে, সে সম্পর্কে জানতেন ওই ব্যক্তি।
এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুম্বই হামলার আরেক চক্রী ডেভিড হেডলি বারবার তাহাউর রানাকে সতর্ক করেছিলেন যে ২০০৮ সালে যেন সে কোনওভাবে ভারতে না যায়। ভারতে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানোর জন্য রানার সঙ্গে এক ব্যক্তির সাক্ষাতের ব্যবস্থাও করেছিলেন হেডলিই। দুবাইতেই এই সাক্ষাৎ হয়েছিল।
বর্তমানে এনআইএ জানার চেষ্টা করছে যে দুবাইয়ের এই রহস্যজনক ব্যক্তি পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে যুক্ত নাকি পাক সেনার কোনও শীর্ষ কর্তা ছিলেন। কিংবা পাকিস্তান থেকে পরিচালিত লস্কর-ই-তৈবা সংগঠনের কোনও শীর্ষনেতাও হতে পারেন।
এনআইএ-র কাছে সবথেকে আগ্রহের বিষয় হল, এত বছর ধরে ওই রহস্যজনক ব্যক্তির পরিচয় গোপন রাখা হয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থার অনুমান, রানাকে মার্কিন গোয়েন্দারা যখন জেরা করেছিলেন, তখনই হয়তো ওই ব্যক্তির পরিচয় ফাঁস করেছিল। ওই নথি এবার ভারতের হাতে এসেছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় জানা গেলেই, তদন্তে বড় মোড় আসতে পারে।
এর আগেই এনআইএ তদন্তে জানা গিয়েছিল যে মুম্বই হামলার পরিকল্পনা অনেক বছর আগেই করা হয়েছিল। ২০০৫ সালে ডেভিড হেডলি তাহাউর রানাকে বলেছিলেন যে লস্কর-ই-তৈবা তাঁকে (হেডলি) ভারতে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। তাহাউরের ইমিগ্রেশন ফার্মে কাজ করার আড়ালে সে রেইকি চালাবে। হেডলির বিদেশি চেহারা ও মার্কিন পাসপোর্ট তাঁকে মুম্বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে অবাধ ঘোরাফেরা ও ভিডিয়ো রেকর্ডিং করতে সাহায্য করেছিল, যা পাকিস্তানে পাঠিয়েছিল।
এনআইএ-র অনুমান, শুধু মুম্বই নয়, দেশের আরও একাধিক বড় শহরে একই ধরনের হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল লস্কর-ই-তৈবার।