মুম্বই: মঙ্গলবার বিকেলে মুম্বইয়ের মেরিন ড্রাইভ এলাকায় মহিলা হোস্টেল থেকে কলেজ ছাত্রীর মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মুম্বই পুলিশ ধর্ষণ ও হত্যার মামলা নথিভুক্ত করেছে। ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল ওমপ্রকাশ কানৌজিয়া নামে এক নিরাপত্তাকর্মী। ফলে পুলিশের প্রাথমিক সন্দেহ পড়েছিল তারই উপরে। কিন্তু, পরে ওই সন্দেহভাজনকে চার্নি রোড রেলস্টেশনের কাছে এক রেললাইনে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই সরকারি মহিলা হোস্টেলে গত ১৫ বছর ধরে কর্মরত ছিলেন তিনি। এই অবস্থায় এই ঘটনার পিছনে অন্য কোনও রহস্য আছে কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। নিহত কলেজ ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই এই বিষয় স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্তা।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ছাত্রী বান্দ্রার একটি সরকারি পলিটেকনিক কলেজে পড়তেন। যিনি আদতে মহারাষ্ট্রের বিদর্ভের বাসিন্দা ছিলেন। মঙ্গলবার সকাল থেকেই তার কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। হোস্টেলের চতুর্থ তলায় তাঁর ঘরটিও বাইরে থেকে তালা বন্ধ ছিল। বিকেলে মেরিন ড্রাইভ থানায় খবর দিয়েছিল হোস্টেল কর্তৃপক্ষ। পুলিশের একটি দল এসে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে। সেখানে, মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ওই কলেজ ছাত্রীকে। তাঁর গলায় একটি দোপাট্টা পেঁচানো ছিল। তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। মুম্বইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার অভিনব দেশমুখ বলেছেন, “সাবিত্রী বাই হোস্টেলে একটি মেয়ে নিখোঁজ এবং তার ঘর বাইরে থেকে তালাবদ্ধ বলে খবর পেয়েছিলাম আমরা। ঘরের ভিতরে গলায় দোপাট্টা জড়ানো এবং মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। আমাদের সন্দেহ, তাঁকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।”
এরপর, তদন্তে নেমে পুলিশ দেখেছিল, ওমপ্রকাশ কানৌজিয়া নামে ৩০ বছর বয়সী এক হোস্টেলকর্মীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁকে ধরার জন্য খোঁজ খবর করা শুরু করে পুলিশ। তাকে ধরতে অতিরিক্ত কমিশনার অভিনব দেশমুখ এবং মেরিন ড্রাইভের পদস্থ পুলিশ ইন্সপেক্টর নীলেশ বাগুলের অধীনে একটি দল গঠন করা হয়। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ হোস্টেলের পিছনে চার্নি রোড স্টেশনে এলাকায় এক মৃত ব্যক্তির খবর পাওয়া যায়। পুলিশ গিয়ে দেখে সেই ব্যক্তিই ওমপ্রকাশ কানৌজিয়া। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, ওমপ্রকাশ ১ নম্বরের প্ল্যাটফর্মের কাছে রেললাইনের উপর শুয়ে পড়েছিলেন। এরপর, চার্চগেট স্টেশন থেকে আসা একটি ট্রেনের ধাক্কায় তাঁর মৃত্যু হয়। পরে তাঁর দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওমপ্রকাশ আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই মনে করছে পুলিশ। তবে এই জোড়া মৃত্যুর পিছনে আর কোনও কাহিনি লুকিয়ে আছে কিনা, সেই দিকটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।