মুম্বই: প্রমোদতরী থেকে মাদক উদ্ধার (Mumbai Cruise Drug Case) ও আরিয়ান খানের গ্রেফতারি (Aryan Khan Arrest) নিয়ে প্রতিদিনই উঠে আসছে নিত্যনতুন দাবি। আরিয়ানের গ্রেফতারির পর এনসিবি(NCB)-র সাক্ষী প্রভাকর সেইল (Prabhakar Sail) জানিয়েছিলেন, আরিয়ানকে ছাড়াতে শাহরুখ খান(Shahrukh Khan)-র কাছ থেকে ১৮ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছিল। এরমধ্যে ৫০ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যেই দিয়েছিলেন শাহরুখ খানের ম্যানেজার পুজা দাদলানি(Pooja Dadlani)। টাকা আদায়ের ঘটনায় কিরণ গোসাভি ও স্যাম ডি’সুজা (Sam D’Suza) নামক যে দু’জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল, এ বার তাদের মধ্যেই মুখ খুললেন একজন।
আরিয়ানের গ্রেফতারির কিছুদিন পরেই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছিলেন এনসিবির সাক্ষী প্রভাকর সেইল। তিনি দাবি করেছিলেন, সমীর ওয়াংখেড়ে (Samner Wankhede) তাঁকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছিলেন। তাঁকে যে মাদক মামলায় সাক্ষী হিসাবে পেশ করা হবে, সে বিষয়ে তিনি জানতেনই না। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ জানিয়েছিলেন, এনসিবির হেফাজত থেকে আরিয়ান খানকে মুক্তি দিতে শাহরুখ খানের ম্যানেজার পুজা দাদলানির কাছ থেকে ২৫ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল। পরে তা ১৮ কোটি টাকায় রফা হয়। এরমধ্যে ৮ কোটি টাকাই এনসিবির জ়োনাল অফিসার সমীর ওয়াংখেড়েকে দেওয়ার কথা ছিল।
পুজা দাদলানির কাছ থেকে টাকা আদায়ের কাজ করছিলেন কিরণ গোসাভি নামক এক ব্যক্তি। প্রভাকর সেইল তারই দেহরক্ষী ছিলেন। কিরণ গোসাভির সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করছিলেন স্যাম ডি’সুজা নামক অপর এক ব্যক্তি। তিনিই গোসাভি ও পুজা দাদলানির মধ্যে দেখা করিয়ে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন প্রভাকর সেইল।
রবিবারই একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে স্য়াম ডি’সুজা জানান, তিনি ২৫ কোটি টাকার চুক্তি সম্পর্কে প্রথমে কিছুই জানতেন না। তিনি কেবল শাহরুখ খানের ম্যানেজার পুজা দাদলানির সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি জানান, এই দীর্ঘ সময় ধরে তিনি দিল্লিতে ছিলেন এবং শীঘ্রই এনসিবির বিশে, তদন্তকারী দলের কাছে হাজিরা দিয়ে নিজের বয়ান দেবেন।
স্যাম ডিসুজার দাবি, তিনি আগে থেকে কিরণ গোসাভিকে চিনতেন না, ২৫ কোটির চুক্তির বিষয়েও কিছু জানা ছিল না। গত ১ অক্টোবর (প্রমোদতরীতে তল্লাশি অভিযান চালানোর আগের দিন) সুনীল পাটিল নামক এক ব্য়ক্তির সাহায্যে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে কিরণ গোসাভি।
স্যাম ডি’সুজা বলেন, “৩ অক্টোবর গোসাভির সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আমি জানতে চেয়েছিলাম, কী চায় সে। ও (কিরণ গোসাভি) আমায় বলেছিল, আরিয়ান খান গ্রেফতার হয়েছে এবং সে শাহরুখ খানের ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করতে চায়। আমি বলেছিলাম, আমার কাছে পুজা দাদলানির নম্বর নেই, তবুও আমি যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। শেষ অবধি আমি পুজা দাদলানির নম্বর জোগাড় করতে পারিনি।”
তাঁর আরও দাবি, “পরে গোসাভি আবারও আমার কাছে আসে এবং জানায়, আরিয়ান খানের কাছে মাদক পাওয়া যায়নি। আমরা তাকে জেল থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারি। এরপর আমি পুজা দাদলানির নম্বর জোগাড় করি। যখন গোসাভির সঙ্গে পুজার মুখোমুখি দেখা হয়, তখনও আমি উপস্থিত ছিলাম। গোসাভি নিজেকে তদন্তকারী অফিসার বলে দাবি করেছিল। আমি ওর আসল পরিচয় জানতাম না, তাই আমিও স্যার বলেই সম্বোধন করছিলাম।”
স্যাম ডি’সুজার দাবি, কিরণ গোসাভি একাধিক মিথ্যা কথা বলেছে। নিজের দেহরক্ষী প্রভাকর সেইলের নম্বরও সে ফোনে সমীর ওয়াংখেড়ে নামে সেভ করেছিল সকলকে ভুল পথে চালিত করতে। নিজের গাড়িতে এনসিবির স্টিকারও লাগিয়েছিল গোসাভি, এমনটাই দাবি স্যামের।
আরিয়ান খানের গ্রেফতারির পর সুনীল পাটিলের মাধ্যমে যখন জানতে পেরেছিলেন পুজা দাদলানির কাছ থেকে কিরণ গোসাভি ৫০ লক্ষ টাকা নিয়েছে, তখন চমকে গিয়েছিলেন বলেই দাবি করেন স্যাম ডি’সুজা। পরে কিরণ গোসাভির সঙ্গে আরিয়ান খানের ছবিও ভাইরাল হয়। সুনিল পাটিলই তাঁকে টাকা জোগাড় করতে বলেছিলেন পুজা দাদলানিকে ফেরত দেওয়ার জন্য।