মুম্বই: ক্রমশ বাড়ছে করোনা সংক্রমণ (COVID-19)। তবে কি আবার লকডাউন(Lockdown)-র পথেই হাঁটতে হবে? এখনও অবধি কোনও রাজ্য বা জেলায় লকডাউন ঘোষণা না হলেও, মঙ্গলবার মুম্বই(Mumbai)-র মেয়র কিশোরী পেডনেকর (Kishori Pednekar) জানালেন, রাজ্যে যদি করোনা সংক্রমণ বাড়তেই থাকে, তবে লকডাউনের সম্ভাবনা রয়েছে।
মুম্বইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকর জানান, এখনও লকডাউন নিয়ে চিন্তাভাবনা না করা হলেও, মুম্বইয়ে দৈনিক সংক্রমণ যদি ২০ হাজারের গণ্ডি পার করে, তবে লকডাউনের পথে হাঁটতে হবে।
মেয়রের কথায়, “মুম্বইয়ে যদি দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজার পার করে, তবে আমাদের লকডাউন জারি করতেই হবে। একইসঙ্গে সরকারকে করোনাবিধি পরিবর্তন নিয়েও চিন্তাভাবনা করতে হবে।”
রাজ্যে ফের একবার করোনা সংক্রমণ উর্ধ্বমুখী হতেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray)। সম্প্রতিই তিনি রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একটি জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন, সেই বৈঠকে কঠোর লকডাউনের মতো বিধিনিষেধের বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল।
বৈঠকে যে বেশ কিছু ইস্যু উঠে এসেছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিল বিধিনিষেধ বা কঠোর আংশিক লকডাউন জারি করার ক্ষেত্রে মানদণ্ড কী হতে পারে। সেক্ষেত্রে হাসপাতালে কতগুলি বেড খালি রয়েছে, রোগীদের অক্সিজেনের চাহিদার মতো বিষয়গুলি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এই সব মানদণ্ডের উপর ভিত্তি করেই ভবিষ্যতের বিধিনিষেধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
মুম্বইয়ের মেয়র এদিন জানান, আগামী ২-৩দিনের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ফের কথা বলবেন। সেই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
লকডাউনের কারণে জীবনযাত্রা ব্যপকভাবে প্রভাবিত হলেও, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তখন আর কোনও উপায় থাকবে না বলেই জানান মুম্বইয়ের মেয়র। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষ যদি থিয়েটার, বাগান বা মার্কেটের মতো জনবহুল জায়গায় নিয়ম ভেঙে ক্রমাগত ভিড় জমাতে থাকেন, তবে মুম্বইয়ে মিনি লকডাউনও জারি করা হতে পারে।”
সোমবারই মুম্বইয়ে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৮২ জন, যা গত বছরের ১৮ এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ জনের মৃত্যুও হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৪০ জন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত বলে জানা গিয়েছে।এই নিয়ে মুম্বইয়ে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬৮-তে বেড়ে দাঁড়াল।
গতকালই বৃহ্নমুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের তরফে জানানো হয়েছে, উর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণের জেরে প্রথম থেকে নবম ও একাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন ৩১ জানুয়ারি অবধি বন্ধ থাকবে। কেবল দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে আসতে পারবে।
এদিকে, সোমবার থেকেই দেশজুড়ে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ শুরু হয়েছে। বিএমসির নির্দেশিকা অনুযায়ী, নবম ও একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের করোনা টিকা নেওয়া হয়ে গেলে, তারা স্কুলে আসতে পারবে।
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কন্টেনমেন্ট জ়োন নিয়েও বিএমসির তরফে নয়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যদি কোনও বিল্ডিং বা হাউসিং সোসাইটির বাসিন্দাদের মধ্যে ২০ শতাংশের করোনা ধরা পড়লেই গোটা বাড়িটি সিল করে দেওয়া হবে। সোসাইটির ক্ষেত্রে যে অংশে সংক্রমণ ছড়িয়েছে, সেই কমপ্লেস বা উইংটি সিল করে দেওয়া হবে। করোনা আক্রান্ত সমস্ত রোগীর জন্য ১০ দিনের আইসোলেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।