মন্দির বানানোর জন্য জমি দান করছেন মুসলিমরা। তামিলনাড়ুর তিরুপুর জেলার গ্রাম ওট্টাপালায়মে এরকমই এক ঘটনার সাক্ষী থাকলেন এলাকাবাসীরা। গণপতিপালায়ম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ওই গ্রামে গোলাপ বাগান এলাকায় প্রায় ৩০০ পরিবারের বাস। হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষই বাস করেন সেখানে। মিলেমিশে দীর্ঘদিন ধরে পাশাপাশি বাস করে আসছেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষ। ওই চত্বরে মুসলিমদের নমাজ পড়ার জন্য একটি মসজিদ রয়েছে বটে, কিন্তু হিন্দুদের জন্য কোনও মন্দির ছিল না। গ্রামের মধ্যে সকলে মন্দির বানাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু জমির অভাবের জন্য সেটা হয়ে উঠছিল না।
শেষ পর্যন্ত এই মুশকিল আসান করলেন গ্রামেরই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। মসজিদের যে জমি ছিল, সেখান থেকে তিন শতক জমি তাঁরা দান করেন মন্দির নির্মাণের জন্য। ওই জমির আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৬ লাখ টাকা। জমি পাওয়ার পর সেখানে মন্দির নির্মাণের কাজও শুরু হয়ে যায় দ্রুত। অবশেষে মন্দির তৈরির সব কাজ মেটানোর পর, গতকালই ওট্টাপালায়মের ওই গণেশ মন্দিরের উদ্বোধন হয়। গ্রামবাসীদের বহু প্রতীক্ষিত এই মন্দির উদ্বোধনে গতকাল এক উৎসবের চেহারা নেয় গোটা এলাকায়।
গ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা দল বেঁধে শোভাযাত্রা করে মন্দিরে পৌঁছান। পাঁচটি আলাদা আলাদা ট্রে’তে করে সাজিয়ে বিভিন্ন রকমারি জিনিসপত্র নিয়ে তাঁরা উপস্থিত হন গণেশ মন্দিরে। মন্দির উদ্বোধনের এই শুভ লগ্নে সেই সাজানো ট্রে’গুলি মন্দিরে দান করেন তাঁরা। গ্রামের উভয় সম্প্রদায়েরই আট থেকে আশি, সকলে সামিল হন এই উৎসবের আনন্দে। মন্দিরে আসা মুসলিমদের গলায় মালা পরিয়ে তাঁদের স্বাগত জানান হিন্দুরাও। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সৌভ্রাতৃত্বের এক অসামান্য নিদর্শন হয়ে থাকল তামিলনাড়ুর এই ছোট্ট গ্রাম।