তিরুবনন্তপুরম: ফিরছে লকডাউনের স্মৃতি। কেরলে (Kerala) নিপা ভাইরাসের (Nipah Virus) দাপটে ঘরবন্দি সাধারণ মানুষ। চলতি বছরে এখনও অবধি ৬ জন নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। সংক্রমণ ছড়াতেই কোঝিকোড়ের একাধিক পুরসভাকে কন্টেনমেন্ট জ়োন (Containment Zone) ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্বের মতো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর অবধি কোঝিকোড়ের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেরলে নিপা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তেই অন্যান্য রাজ্যেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নামও।
২০১৮ সালে কেরলে প্রথম নিপা ভাইরাসের খোঁজ মেলে। কিন্তু তার আগেও দুইবার দেশে নিপা সংক্রমণ ছড়িয়েছিল। দুইবারই পশ্চিমবঙ্গে ছড়িয়েছিল সংক্রমণ। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে শুধুমাত্র কেরলেই এই সংক্রমণের হদিস মিলেছে। ২০১৯ সালে এরনাকুলামে নিপা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। ২০২১ সালে কোঝিকোড়ে নিপা সংক্রমণে মৃত্যু হয় এক রোগীর। চলতি বছরেও সংক্রমণে এখনও অবধি দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
নিপা ভাইরাস হল একধরনের জ়ুটোনিক ভাইরাস। সাধারণত প্রাণীদেহে এই সংক্রমণ ছড়ালেও, তা মানবদেহেও সংক্রমিত হয়। ফ্রুট ব্যাট বা বাদুড় থেকেই মূলত এই সংক্রমণ ছড়ায়। সংক্রমিত বাদুড়ের সংস্পর্শে আসা কোনও প্রাণী বা মানুষ থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এমনকী, বাদুড়ের সংস্পর্শে আসা ফল থেকেও নিপা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।
শুধু কেরলই নয়, আরও একাধিক রাজ্যে নিপা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজির একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, কেরল ছাড়াও তামিলনাড়ু, কর্নাটক, গোয়া, মহারাষ্ট্র, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, অসম, মেঘালয় ও পন্ডিচেরীতেও নিপার ভাইরাল অ্যান্টিবডি পাওয়া গিয়েছে। ফলে এই রাজ্যগুলিতেও মারণ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাছাড়া রাজ্য থেকে বহু পরিযায়ী শ্রমিক দক্ষিণী রাজ্যগুলিতে কাজ করতে যান। সেখান থেকেও পশ্চিমবঙ্গ সহ অন্যান্য রাজ্যে নিপা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কেরলে অত্যাধিক বাদুড় থাকার কারণেই হয়তো সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে প্রতি বছর। এছাড়া কেরলে খেজুর, তাল গাছের মিষ্টি রস এবং তা থেকে তৈরি তাড়ি খাওয়ার চল রয়েছে। আক্রান্ত বাদুড় থেকে যদি গাছের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ায় তবে সেখান থেকেও মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন।