
নয়াদিল্লি: পরমাণু ব্ল্যাকমেল সহ্য করবে না ভারত। সোমবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ থেকে সেই কথাটাই সাফ বলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন তিনি বলেন, ‘দেশে এখন নিউ নর্ম্যাল। ভারতের উপর সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালালে, ভারতও তাদের যোগ্য জবাব দেয়। আর এই নিউ নর্ম্যালে কোনও রকমের পরমাণু ব্ল্যাকমেল সহ্য করবে না দেশ।’
পহেলগাঁও হামলার পর থেকেই বিষিয়ে গিয়েছে দুই দেশের সম্পর্কে। উত্তেজনা চরমে ওঠে ৭ মে ভারতের প্রত্যাঘাতের মধ্যে দিয়ে। তবে প্রথম দফায় ভারত কোনও রকম আঘাত না করলেও আগ বাড়িয়ে নিজেই বিতর্কে জড়ানোর চেষ্টা করে পাকিস্তানি প্রশাসন। রাশিয়ায় বসে পাক রাষ্ট্রদূত দাবি করে, ‘ভারত যদি হামলা চালায় আমরা পূর্ণ শক্তিতে প্রত্যাঘাত করব। পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার করা থেকে পিছপা হব না।’
তবে পাকিস্তান যে শুধু ভারতকেই পরমাণু যুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছে এমনটা নয়। সংঘর্ষ আটকাতে আমেরিকার কাঁধেও বন্দুক ঠেকাতে পিছপা হয়নি তারা। সূত্রের খবর, সংঘর্ষ বিরতির আগে মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ফোন করলে তিনি নাকি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘পরিস্থিতি বেগতিক হলে পাকিস্তান পরমাণু যুদ্ধের দিকে এগোবে।’দুই দেশই পরমাণু শক্তি সম্পন্ন। এই পরিস্থিতিতেই সেই আশঙ্কার জেরেই মধ্যস্থতায় এগিয়ে আসে ট্রাম্প। অবশ্য, তিনি গতকাল নিজেই বলেছেন, ‘আমরা দুই দেশের পরমাণু যুদ্ধ আটকে দিয়েছি।’
কিন্তু হঠাৎ করেই ব্ল্যাকমেলের কথা কেন তুললেন মোদী?
শুক্রবার ভোররাতে পাকিস্তানের একাধিক সেনাছাউনিতে হামলা চালায় ভারত। পরে সেনা তরফে জানানো হয়, মোট আটটি পাক বায়ুসেনা ঘাঁটিকে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। এই সময়কালে হামলা চালানো হয় সারগোধা বায়ুসেনা ঘাঁটিতেও। যার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে কিরানা হিলসের আন্ডারগ্রাউন্ড পরমাণু কেন্দ্র, দাবি একাংশের। তবে কি সেই সেখানেও হামলা চালিয়েছে ভারত?
সেনা জানিয়েছে, কিরানা হিলসে আদৌ পরমাণু অস্ত্র আছে কিনা জানা নেই তাদের। হামলা সম্পর্কেও কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি। এদিকে আবার পাকিস্তানে তৈরি হচ্ছে অন্য ছবি। তাদের দাবি, কিরানা হিলসে ভারত হামলা চালিয়ে পরমাণু যুদ্ধের জন্য উস্কানি দিচ্ছে।
তবে, এ দিন রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়ে দেন, পরমাণু হামলার তত্ত্ব আসলে পাকিস্তানের ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা, তা তারা কোনওভাবেই সফল হবে না। এরপর জল্পনা উঠতে থাকে, কী ধরনের ব্ল্যাকমেলের কথা বলতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী?
পাকিস্তানের কাছে মানুষ নয়, যুদ্ধ আগে। সংঘর্ষ ঘিরে যখন ক্রমাগত পারদ চড়েছে দুই দেশের মধ্যে। চলছে আঘাত-প্রত্যাঘাত। সেই আবহেও নিজেদের অসামরিক বিমান বন্ধ করেনি পাকিস্তান। ওয়াকিবহালের মতে, এটা আসলে ভারতকে বিপাকে ফেলার একটা চক্রান্ত। ঘুরপথে যাতে ভারত সেদেশের জনগণদের উপর ভুল করে আঘাত করে বসে, সেই জন্যই অসামরিক বিমান পরিষেবা চালু রেখেছিল তারা।