মুম্বই: নবাব মালিক মঙ্গলবার হুমকি দিয়েছিলেন, তিনি নাকি দেবেন্দ্র ফড়নবীসের নামে ‘হাইড্রোজেন বোমা’ ফাটাবেন। আজ ঘটা করে সাংবাদিক বৈঠকও করেছেন। মহারাষ্ট্রের মন্ত্রীর দাবি, ফড়ণবীসের সঙ্গে নাকি সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে দাউদ ইব্রাহিমের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সঙ্গী রিয়াজ ভাটির। যদিও এই ধরনের অভিযোগকে তেমন গুরুত্ব দিতে চাইছে না বিজেপি নেতৃত্ব। বরং যেভাবে তিনি হাইড্রোজেন বোমা ফাটাবেন বলে জানিয়েছিলেন, তা নিয়ে ঠাট্টা করতে ছাড়ছে না বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য, কোথায় হাইড্রোজেন বোমা! এ তো ফুলঝুরিও নয়।
মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা আশিস শেলার কিছুটা উপহাসের ছলেই নবাব মালিকের ‘হাইড্রোজেন বোমা’র পাল্টা আক্রমণ করেন। বিজেপি নেতা বলেন, “যাঁরা হাইড্রোজেন বোমার দাবি করেছেন, তাঁরা ফুলঝুরিও ফাটাতে পারেননি।” তিনি আরও বলেন, “মুন্না যাদব, হাজি আরাফাত এবং হায়দার আজম দলীয় কর্মী (কিন্তু) আরাফাত ও আজমের বিরুদ্ধে একটিও মামলা নেই। যাচাই-বাছাই করার পরই তাদের দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর এগুলির মধ্যে কোনওটাই ফড়ণবীসের সময়ে হয়নি।”
তাঁর বক্তব্য, “ইমরান আলম শেখ, যিনি জাল নোটের সঙ্গে ধরা পড়েছিলেন, তিনি সেই সময় কংগ্রেসের সচিব ছিলেন এবং এখন এনসিপির কর্মী।” রিয়াজ ভাটি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে কোনওরকম যোগসূত্র থাকার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি।
এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে নবাব মালিক বলেন, “রিয়াজ ভাটি কে জানেন? ভুয়ো পাসপোর্ট নিয়ে ধরা পড়েছিল, দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে তাঁর সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। মাত্র দুইদিনের মধ্যই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। রিয়াজকেই দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের সঙ্গে এবং বিজেপির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে।”
তিনি আরও যোগ করে বলেন, “আমরা প্রধানমন্ত্রীকে এই বিষয়ে জড়াতে চাই না, কিন্তু রিয়াজ ভাটি প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে গিয়েছে এবং তার সঙ্গে ছবিও তুলেছে। অন্যান্য দেশের আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডনরা থানেতে দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের নিয়োগ করা পুলিশ অফিসারদের ফোন করেছিল, পরে বিষয়টি নিয়ে রফা করা হয়।”
দেবেন্দ্র ফড়ণবীস মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনও একাধিক দুর্নীতি ও আন্ডারওয়ার্ল্ডের মাফিয়াদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেন নবাব মালিক। তিনি বলেন, “ফড়নবীস যখন ক্ষমতায় ছিলেন, নাগপুরের কুখ্যাত দুষ্কৃতী মুন্না যাদবকে ঠিকে শ্রমিক সংগঠনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। হায়দার আজ়িম নামক এক ব্যক্তি, যে বাংলাদেশীদের অনুপ্রবেশ করতে সাহায্য করে, তাঁকে মৌলানা আজাদ ফিন্যান্স কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ করেছিলেন ফড়ণবীস।”
এনসিপি নেতার এই বিতর্কিত মন্তব্যের পরই টুইটারে একটি পোস্ট শেয়ার করেন দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। তাতে কারোর নাম উল্লেখ না করলেও লেখাটি দেখেই আন্দাজ করে নেওয়া গিয়েছে কাকে আক্রমণ করতে চেয়েছেন তিনি। ইংরেজিতে শেয়ার করা ওই পোস্টের তর্জমা করলে দাঁড়ায় , “আজকের চিন্তাভাবনা- আমি অনেক আগেই শিখেছি যে শুয়োরের সঙ্গে কখনওই কুস্তি লড়তে নেই, নিজেই নোংরা হয়ে যাবে। আর তাছাড়া শুয়োরের এটাই ভাল লাগে।”