কেওনঝড়: ‘কালাজাদু’-র প্র্যাক্টিস করেন। গ্রামবাসীর এমনই সন্দেহের বলি হলেন এক দম্পতি। অনাথ হয়ে গেল তাঁদের ছোট্ট শিশুটি। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার কেওনঝড় জেলায়। ওই দম্পতির ছোট্ট মেয়েই বাবা, মায়ের উপর হামলার খবরটি দৌড়ে গিয়ে মামাকে জানায়। কিন্তু, শেষরক্ষা হয়নি। ছোট্ট মেয়েটির সামনেই মৃত্যু হয় তার বাবা, মায়ের।
পুলিশ জানায়, মৃত দম্পতির নাম, বাহবা মুর্মু (৪৫) এবং তাঁর স্ত্রী ধানি মুর্মু (৩৫)। ছত্তিশগড়ের কেওনঝড় জেলার রহসুল ঝুলুকিয়াতিয়া সাহি গ্রামের বাসিন্দা বাহবা এবং ধানির একটি ছোটো মেয়ে রয়েছে। গত শনিবার রাতে বাহবা এবং ধানি রাতের খাবার খাওয়ার পর বাড়ির উঠোনে ঘুমাচ্ছিলেন। হঠাৎ করেই মাঝরাতে কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁদের বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে এবং ধারাল অস্ত্র দিয়ে দম্পতির উপর এলোপাথাড়ি কোপ মারে। প্রাণ বাঁচাতে দম্পতি বাড়ি ছেড়ে দৌড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তাঁরা।
তারপর বাবা, মায়ের আর্ত চিৎকার শুনে ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে আসে তাঁদের নাবালিকা মেয়ে। ঘরের উঠোনে প্রচুর রক্ত দেখে সে হতভম্ব হয়ে যায়। তারপর বাড়ির মেন গেট খোলা দেখে মেয়েটি বাইরে বেরোতেই দেখে, ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে রয়েছেন বাবা-মা। রক্তাক্ত অবস্থায় বাবা,মাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে সে দৌড়ে গিয়ে খবর দেয় বাড়ির পাশেই থাকা মামা কিষান মারান্ডিকে। তবু তার বাবা, মাকে বাঁচানো যায়নি।
কিষান মারান্ডি বলেন, রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ বাহাবার মেয়ে আমাকে গিয়ে খবর দেয়। সঙ্গে সঙ্গে আমি মোটরবাইক নিয়ে ঘটনাস্থলে আসি। তারপর এসে দেখি আমার বোন শেষ নিশ্বাস নিচ্ছে। আর তার স্বামীর নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। তারপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে এবং দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
কেওনঝড়ের এসপি রেশমি মহাপাত্র বলেন, “এই দম্পতি কালজাদু করতেন সন্দেহে এঁদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে।” বর্তমানে সমাজ ব্যবস্থা উন্নত হলেও মানসিকতার পরিবতন যে বিশেষ বদল ঘটেনি, তা ওড়িশার কেওনঝড়ের এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট।