বিশাখাপত্তনম: পেটের টান বড় দায়! সেই কারণেই মাত্র ১৭ বছর বয়সে বাড়িঘর ছেড়ে ভিন রাজ্যে কাজ করতে এসেছিল কিশোরী। সখ্যতা তৈরি হয়েছিল স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে। জন্মদিনে প্রেমিক ডেকেছিল সারপ্রাইজ দেবে বলে। সেখানে গিয়ে শুধু প্রেমিকই নয়, তাঁর বন্ধুদেরও লালসার শিকার (Physical Assault) হতে হল কিশোরীকে। তবে দুর্ভাগ্যের শেষ এখানেই নয়। সমুদ্র সৈকতে গিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে কিশোরীকে বাঁচায় কয়েকজন ফোটোগ্রাফার। তাঁরা বুঝিয়ে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার নাম করেই ফের গণধর্ষণ করে কিশোরীকে!
পৌশাচিক ঘটনাটি ঘটেছে অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তনমে। পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, ১৭ বছরের ওই কিশোরীকে মোট ১৩ জন মিলে গণধর্ষণ করে। এদের মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের ১২ জানুয়ারি অবধি বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
জানা গিয়েছে, ওই কিশোরীর বাড়ি ওড়িশায়। পেটের দায়ে ৯ মাস আগে বিশাখাপত্তনমে একটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতে আসে। গত ১৭ ডিসেম্বর হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায় কিশোরী। পরেরদিন তাঁর বাবা বিশাখাপত্তনমে নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেন। পরে ওড়িশা পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। ২৫ ডিসেম্বর তাঁকে উদ্ধার করে বিশাখাপত্তনমে আনা হয়। ৩১ ডিসেম্বর পুলিশের কাছে বয়ান দেয় ওই কিশোরী। তখনই বারংবার গণধর্ষণের বিষয়টি সামনে আসে। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ওই কিশোরী।
জানা গিয়েছে, ১৭ ডিসেম্বর ওই কিশোরীর জন্মদিন ছিল। ওই দিন তাঁর প্রেমিক ইমরান (ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা) ও তাঁর বন্ধু শোয়েব তাঁকে জন্মদিন পালন করার জন্য বিশাখাপত্তনমের আরকে সমুদ্র সৈকতে নিয়ে যায়। সেখানেই একটি লজে নিয়ে গিয়ে জোর করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করায় দুইজন। পরেরদিন সকালে তাঁরা ওই কিশোরীকে বাড়িতে ছেড়ে আসে।
এদিকে, প্রেমিক ও তাঁর বন্ধুর নির্যাতনের কারণেই জীবন শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কিশোরী। ফের আরকে বিচেই যায় আত্মহত্যা করতে। সেখানে তাঁকে আত্মহত্যা করা থেকে আটকায় কয়েকজন ফোটোগ্রাফার। তাঁরা কিশোরীকে বোঝায় এবং বাড়ি নিয়ে যাবে বলে। এরপর তাঁরাও কিশোরীকে নিয়ে একটি লজে যায় এবং সেখানে ৪ জন মিলে গণধর্ষণ করে।
পরেরদিন আরও ছয়জন যুবক আসে এবং তাঁরাও লাগাতার গণধর্ষণ করে। ২২ ডিসেম্বর অবধি এই পৌশাচিক অত্যাচার চলতে থাকে কিশোরীর উপরে। ২৩ ডিসেম্বর এক অভিযুক্ত তাঁকে ওড়িশায় পৌঁছে দেয় এবং ২০০ টাকা দেয়। পরে এক পুলিশ আধিকারিক কিশোরীকে আশ্রয় দেন এবং তাঁর মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ৩১ ডিসেম্বর ওই কিশোরী তাঁর বাবার সঙ্গে বিশাখাপত্তনমে এসে বয়ান দেয় এবং ধর্ষণে অভিযুক্তদের নাম জানায়।
পুলিশ পকসো আইনে মামলা দায়ের করে। ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করা হয় ইমরানকে (কিশোরীর প্রেমিক)। বিশাখাপত্তনমের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্ত ফোটোগ্রাফারদের মধ্যে ১০ জনকে গ্রেফতার করে। এখনও ২ জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।