মুম্বই: দীর্ঘদিন বাদে ফের আলোচনায় দাউদ ইব্রাহিম। সরকারিভাবে কিছু না জানানো হলেও, সূত্রের খবর বিষ দেওয়া হয়েছে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডনকে। গত দুদিন ধরে করাচির এক হাসপাতালে ভর্তি আছে সে। তবে, এর আগে থেকেই ৬৭ বছর বয়সী দাউদ গুরুতর স্বাস্থ্যগত জটিলতায় ভুগছিলেন। একসময় গোটা মুম্বই কাঁপত তার নামে। সেই মুম্বই আন্ডারওয়ার্ল্ডের রাজা আজ লাঠির সাহায্য ছাড়া চলাফেরাই করতে পারে না। কয়েক বছর আগে, দাউদের পায়ে একটি ক্ষত থেকে গ্যাংগ্রিন হয়ে গিয়েছিল। সেই সময়ও করাচির এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। দাউদকে বাঁচাতে চিকিৎসকরা তার পায়ের দুটি আঙুল কেটে বাদ দিয়েছিলেন। তারপর থেকেই লাঠি ছাড়া আর হাঁটতে পারেন না দাউদ।
বছর দুই আগে, মুম্বই থেকে নেপালে পালানোর চেষ্টা করার সময় মুম্বই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল, দাউদের একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এজাজ লাকড়াওয়ালা। পুলিশের জেরার মুখে লাকড়াওয়ালাই প্রথম জানিয়েছিল, দাউদের পায়ে গ্যাংগ্রিন হওয়ার কথা। সেই সময় অবশ্য দাউদের ডান হাত ছোটা শাকিল এই দাবি অস্বীকার করেছিল। তবে, চলতি বছরের শুরুতেই ভারতীয় গোয়েন্দাদের একটি সূত্র জানিয়েছিল, লাঠি ছাড়া যে দাউদ এখন আর হাঁটতে পারে না, এই তথ্য একেবারে সঠিক। দীর্ঘদিন ধরে গ্যাংগ্রিনে ভুগছিল ডি কোম্পানির মালিক। গত বছর গ্যাংগ্রিনের বিস্তার রোধে, দাউদের পায়ের দুটি আঙুল কেটে ফেলা হয়েছিল।
গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা গিয়েছিল, দাউদ অস্ত্রোপচার করতে চাননি। কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, অস্ত্রোপচার না করা হলে, অবস্থা গুরুতর আকার নিতে পারে। দাউদকে বাঁচানোই মুশকিল হয়ে যেতে পারে। এরপরই, পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা, ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স বা আইএসআই-এর তত্ত্বাবধানে করাচির এক হাসপাতালে সেই অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু এই অস্ত্রোপচারের ফলে, আন্ডারওয়ার্ল্ড ডনের এখন হাঁটাচলা করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। হাঁটার সময় তাকে লাঠি ব্যবহার করতে হয়। গোয়েন্দা সূত্রে আরও বলা হয়েছিল, মুম্বই কাঁপানো ডনকে আজ তাঁর সেরা সময়ের ছায়া বলা যেতে পারে। দাউদের সেই তেজ আর নেই। তবে, মানসিকভাবে সে আগের মতোই সজাগ।
শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দাউদ ইব্রাহিম তার গ্যাংস্টার সাম্রাজ্য চালানোর ভার অনেকটাই তার ভাই আনিস ইব্রাহিম এবং ডানহাত ছোটা শাকিলকে দিয়ে দিয়েছেন। কয়েক বছর আগে দাউদের এই দুই উত্তরসূরির মধ্যে ব্যাপক মতপার্থক্য দেখা দিয়েছিল। ডি কোম্পানি দুই ভাগে ভাগ হয়েযেতে পারে বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু, দাউদের হস্তক্ষেপেই সেই যাত্রায় যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়েছিল। বর্তমানে আইএসআই ছত্রছায়ার ডি কোম্পানি ভালোভাবেই চলছে বলে শোনা যায়। ছোটা শাকিল গ্যাংয়ের প্রতিদিনের কর্মকাণ্ড সামলায়। আর আনিসের উপর দায়িত্ব রয়েছে, ভারতীয় উপমহাদেশ, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপে ছড়িয়ে বিশাল অপরাধ ব্যবসার দেখাশোনা করা।