
নয়া দিল্লি: দেশজুড়ে বিপর্যস্ত ইন্ডিগোর (IndiGo) বিমান পরিষেবা। বাতিল ২০০-রও বেশি বিমান, দেরিতে উড়ছে শতাধিক বিমান। বিমানবন্দরে এসে চরম হেনস্থার শিকার হন হাজার হাজার যাত্রীরা। দীর্ঘক্ষণ তারা বিমানবন্দরেই অপেক্ষা করেন। দেশের সবথেকে সব এয়ারলাইনে হঠাৎ কি হল যে এভাবে স্তব্ধ হয়ে গেল বিমান পরিষেবা?
জানা গিয়েছে, ক্রু সঙ্কট, নতুন ডিউটির সময়ের নিয়ম ও প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণেই দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদ সহ দেশের বড় বড় বিমানবন্দরগুলিতে ইন্ডিগোর একের পর এক বিমান বাতিল হতে থাকে। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে নতুন ডিউটির সময়ের নিয়ম চালু হতেই ইন্ডিগোয় ব্যাপক পাইলট ও কেবিন ক্রু সঙ্কট দেখা গিয়েছে। পাইলটদের বিমান ওড়ানোর সময় সীমাবদ্ধ হয়ে যেতেই পাইলটের অমিল দেখা গিয়েছে। এমনকী, সম্পূর্ণ রস্টার (কাজের সময়ের তালিকা) বাতিল করতে হয়।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার দিল্লি ও পুণে বিমানবন্দরে প্রযুক্তিগত সমস্যাও দেখা দেয়, যার কারণে চেক ইন ও ডিপারচার কন্ট্রোল সিস্টেম ভেঙে পড়ে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। সারা দিন ধরেই বিমান দেরিতে ওঠা-নামা করায় বাকি বিমানের সময়ও ওলট-পালট হয়ে যায়।
যেখানে ইন্ডিগো নিজে দাবি করে যে তারা দৈনিক ২২০০ বিমান পরিচালন করে, সেখানেই গতকাল ১৪০০-রও বেশি বিমান দেরিতে উড়েছে। ডিজিসিএ-র তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বরে মোট ১২৩২টি বিমান বাতিল হয়েছিল।
বিমান দুর্ঘটনা এড়াতে এবং পাইলট ও বিমানের বাকি কর্মীদের বিশ্রামের পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার জন্যই ডিজিসিএ উড়ানের নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়েছে। দৈনিক ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করা যাবে না। সপ্তাহে সর্বাধিক ৩৫ ঘণ্টা ডিউটি করতে পারবেন পাইলটরা। মাসে ১২৫ ঘণ্টা এবং বছরে সর্বাধিক ১০০০ ঘণ্টা কাজ করতে পারবেন।
যতক্ষণ বিমানে কাজ করছেন, তারপর বিমানের ক্রু-দের বিশ্রামের সময় দিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১০ ঘণ্টা বিশ্রামের সময় দিতে হবে ক্রুদের।
এয়ার ইন্ডিয়া, ভিস্তারা, আকাশা সহ একাধিক এয়ারলাইন্স থাকলেও, দেশে সর্বাধিক ডোমেস্টিক অর্থাৎ অন্তর্দেশীয় বিমান পরিচালন করে ইন্ডিগো। এছাড়া বাকি এয়ারলাইন্সে যেখানে বিমানের সংখ্যা কম থাকে, সেখানেই ইন্ডিগো ওভারনাইট সার্ভিস থাকে ঘনঘন। তবে নতুন নিয়মে নাইট ল্যান্ডিংয়েও সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়াতেই সমস্যা তৈরি হয়েছে।