
শ্রীনগর: পর্যটন ব্যবসাই ছিল তাঁর রুজি-রুটি। পর্যটক তাঁর কাছে ঈশ্বরস্বরূপ! সেই পর্যটকরা বন্দুকের নলের মুখে। আর্তনাদ-কান্না-গুলির শব্দ-রক্ত… এই সব চোখের সামনে দেখে নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি সইদ আদিল হুসেন শাহ। পহেলগাঁওতে যে হত্যালীলা চলেছে, তাতে জঙ্গিদের মূল টার্গেট ছিলেন হিন্দু পর্যটকরাই। বেছে বেছে হিন্দু নিধন চলেছে। তাহলে কেন আদিল? প্রশ্নটা নাড়িয়েছিল। আর উত্তরটা আরও বেশি নাড়িয়ে দেওয়ার মতো। পর্যটকদের বাঁচাতে বুক চিতিয়ে জঙ্গিদের হাত থেকে একে ৪৭ কেড়ে নিতে গিয়েছিলেন বছর ছাব্বিশের আদিল। একবারের জন্য নিজের পরিবারের কথা ভাবেননি। জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেলেন। এক মাত্র মুসলিম। পরিবারের একমাত্র রোজগেরেও বটে!
#WATCH | J&K | Mother of the Anantnag resident Syed Hussain Shah, who lost his life in the #PahalgamTerroristAttack, gets emotional, says, “He was the only bread earner of the family…” pic.twitter.com/W7BgzeVOEC
— ANI (@ANI) April 23, 2025
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, একজন মহিলা পর্যটককে ওই জঙ্গিদের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন আদিল। দৌড়ে গিয়ে জঙ্গিদের হাত থেকে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ডাকাবুকো ওই তরুণ। তখনই গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান তিনি।
এলাকাতেই বাড়ি। পর্যটকদের ঘোড়ার পিঠে চড়িয়ে বৈসরনে ঘোরাতেন। ছোটবেলা থেকে এটাই তাঁর পেশা। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা। ঘটনার পরই আদিলের বাড়িতে থেকে গিয়েছিল মুহুমুর্হু ফোন। কিন্তু সে ফোন কেউ প্রথমে তোলেননি। পরে এক ব্যক্তি তুলে আদিলের বাবাকে জানিয়েছিলেন, তাঁর ছেলে হাসপাতালে ভর্তি। পরে হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন, সবটা শেষ! মা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আদিলের বৃদ্ধ মা। কথা বলার মতো পরিস্থিতিতেই নেই। পুস্তু ভাষাতেই যা বললেন, তার সারমর্ম এটাই, পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিল আদিলই… পর্যটকদের জন্য জীবনটাই দিয়ে দিলেন বছর ছাব্বিশের তরুণ।