শ্রীনগর: ঠিক যেন সিনেমার কোনও দৃশ্যপট। অস্ত্র উদ্ধারে অভিযুক্ত জঙ্গিকে নিয়ে সীমান্তের কাছে গিয়েছিল পুলিশ। সেখানে উদ্ধার হওয়া প্যাকেট থেকে অস্ত্র বের করতেই যখন ব্যস্ত পুলিশকর্মীরা, সেই সময়ই এক পুলিশকর্মীর অস্ত্র ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করল জঙ্গি। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় অভিযুক্ত, আহত হন এক পুলিশকর্মী। পরে বাধ্য হয়ে গুলি চালায় পুলিশও। আহত ওই জঙ্গিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও, পরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে জম্মুতে। মৃত জঙ্গি লস্কর-ই-তৈবার সদস্য ছিল বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই জম্মুর কোট বালওয়াল জেলে বন্দি ছিল ওই পাকিস্তানি জঙ্গি। কিন্তু গরাদের আড়ালেও তাঁর বেআইনি কার্যকলাপ থেমে যায়নি। মহম্মদ আলি হুসেন নামক ওই জঙ্গি জেল থেকেই ড্রোনের মাধ্যমে কাঁটাতারের ওপার থেকে এপারে কীভাবে অস্ত্র সরবরাহ করা হবে, তা নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করত। সম্প্রতিই জেলের এক বন্দিই তাঁর গোপন কার্যকলাপ ফাঁস করে দেয়। জেল কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন, ওই পাকিস্তানি লস্কর জঙ্গি লস্কর-ই-তৈবা ও আল-বাদর সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের অন্যতম পরিচালক। ড্রোনের মাধ্যমে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি জানার পরই তাঁকে আদালতে পেশ করা হয় এবং পুলিশ রিমান্ডে আনা হয়।
বুধবার অস্ত্র উদ্ধার করতেই অভিযুক্ত জঙ্গিকে নিয়ে সীমান্তে যায় পুলিশ। সেখানেই পুলিশি হোফাজত থেকে পালানোর চেষ্টা করে অভিযুক্ত। এক পুলিশকর্মীর অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে তাদের উপরই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে ওই জঙ্গি। গুলিতে আহত হন এক পুলিশকর্মী। এরপরই সীমান্ত পার করে পাকিস্তানে পালানোর চেষ্টা করে ওই জঙ্গি, কিন্তু পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ায় সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। হাসপাতালে আহত পুলিশকর্মী ও জঙ্গিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই পুলিশকর্মীকে বাঁচানো সম্ভব হলেও, হাসপাতালেই মৃত্যু হয় অভিযুক্ত জঙ্গির।
পুলিশের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ওই জঙ্গির কাছ থেকেই অস্ত্র সরবরাহের তথ্য জানা গিয়েছিল। সেই অস্ত্র উদ্ধারেই একের পর এক স্থানে যাওয়া হচ্ছিল। প্রথম জায়গাটিতে কোনও অস্ত্র উদ্ধার না হলেও জম্মুর টোপ গ্রামের কাছ থেকে একটি প্যাকেট মুখবন্ধ অবস্থায় উদ্ধার হয়। তার ভিতরেই ভরা ছিল অস্ত্রগুলি। পুলিশ যখন অস্ত্র উদ্ধারে ব্যস্ত, সেই সময়ই অস্ত্র ছিনিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে অভিযুক্ত। বাধ্য হয়েই গুলি চালায় পুলিশ।