নয়া দিল্লি: দেশে ফের আরেকটা বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের (Vande Bharat Express) চাকা গড়াল। শনিবার ভোপাল-নয়া দিল্লি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ মধ্য প্রদেশের রানি কমলপতি স্টেশন থেকেই সূচনা হয় বন্দে ভারতের। মধ্য প্রদেশের ভোপাল থেকে রাজধানীর মধ্যে সংযোগ রক্ষা করবে এই এক্সপ্রেস ট্রেন। ৭.৪৫ ঘণ্টায় ৭০৮ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবে এই ট্রেন। প্রতি ঘণ্টায় ১০৬ কিলোমিটার বেগে ছুটবে দেশের ১১ তম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস।
এদিন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনের পর ট্রেনে উঠে পড়েন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেখানে স্কুল ছাত্র-ছাত্রী ও ট্রেনের কর্মীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন তিনি। সেখানে এক ছাত্র তার আঁকা প্রধানমন্ত্রীর ছবি মোদীর হাতে তুলে দেন। সকলের মধ্যেই এই ট্রেন উৎসাহ-উদ্দীপনা চোখে মুখে ফুটে উঠেছে। আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিণী বৈষ্ণব ও মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানও। সবুজ পতাকা দেখান নমো। আর শুরু হয় ভোপাল থেকে নয়া দিল্লির বন্দে ভারত এক্সপ্রেস।
এদিকে এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় ইন্দোরে রাম নবমীর দিন মন্দিরের দুর্ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি। ইন্দোরে মন্দিরের ভিতর কুয়ো ভেঙে পড়ে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা এবং চিকিৎসাধীনদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তিনি। এদিকে আজ ১ এপ্রিল। এই প্রসঙ্গে ব্যঙ্গ করে মোদী বলেন, আজকের এই উদ্বোধনকে কংগ্রেসের বন্ধুরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর এপ্রিল ফুল বলবেন বলে তিনি নিশ্চিত ছিলেন। তারপর তিনি বলেন, “কিন্তু আপনারা দেখতে পারছেন ১ এপ্রিল শুরু হল। এটা আমাদের বিশেষজ্ঞতা ও আত্মবিশ্বাসের পরিচয়। ” এরপর তিনি বলেন, “আজ মধ্য প্রদেশ তাদের প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পেল। বন্দে ভারত ট্রেনগুলি প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত, পরিষ্কার এবং সময়মতো চলছে। টিকিটে কালোবাজারির কোনও ঘটনাও ঘটেনি।” তিনি পূর্ববর্তী সরকারকে খোঁচা দিয়ে বলেন তাঁদের ভোটব্যাঙ্ক নিয়েই বেশি মাথাব্যথা ছিল। তাঁরা মধ্যবিত্তদের কথা ভাবেননি। তিনি বলেন,”পূর্ববর্তী সরকারগুলি জনসাধারণকে তুষ্ট করতেই ব্যস্ত ছিল। কিন্তু এই সরকার জনগণের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে নিবেদিত।” তিনি কংগ্রেসকে তোপ দেগে আরও বলেন, “তাঁরা একটি পরিবারকে প্রথম পরিবার হিসেবেই বিবেচনা করত। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পরিবারের কী হবে? তাদের নিজেদের মতো ছেড়ে দেওয়া হত। আর সব দোষ ছিল ভারতীয় রেলওয়ের।”
২০১৪ সালের আগে ভারতীয় রেলের দুর্দশার নিন্দা করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, কোনও সমাধান হবে না জেনে শেষ পর্যন্ত যাত্রীরা অভিযোগ করাই বন্ধ করে দিয়েছিলেন। গত ৯ বছরে রেল বাজেট বেড়েছে এবং এই বছরের বাজেটে মধ্য প্রদেশ ১৩,০০০ কোটি টাকার বেশি পেয়েছে, যেখানে ২০১৪ সালের আগে ছিল ৬০০ কোটি টাকা। তিনি আরও বলেন, “আমাদের দেশে কিছু লোক আছেন যাঁরা ২০১৪ সালের পর প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার প্রতিশ্রুতি নিয়েছে। তারা সেটা প্রকাশ্যেও বলেছে। এ জন্য তাঁরা বিভিন্ন ব্যক্তিকে যুক্তও করেছে। তাঁদের সাহায্য করার জন্য দেশের ভিতর ও বাইরেও লোক রয়েছে। এই লোকেরা নিরলসভাবে মোদীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আজ প্রত্যেক ভারতীয়ই মোদীর সুরক্ষা কবচ।” প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাহুল গান্ধী লন্ডনে ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। তা নিয়ে দেশে সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলে ঝড় উঠেছে। রাহুলের থেকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে বিজেপি। এই আবহেই এ হেন মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।