নয়া দিল্লি: ইতি পড়তে চলেছে সংসদের এক অধ্যায়ে। আজ, সংসদের বিশেষ অধিবেশনে জানানো হল, আজই পুরনো সংসদ ভবনে অধিবেশনের শেষ দিন। আগামিকাল, মঙ্গলবার থেকে নতুন সংসদ ভবনে বসবে অধিবেশন। এ দিন অধিবেশনের শুরুতে লোকসভায় পুরনো সংসদ ভবনের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্যে একদিকে যেখানে জওহরলাল নেহরুর প্রসঙ্গ উঠে এসেছে, তেমনই মনমোহন সিংয়ের শাসনকালের অধ্যায়ও উঠে আসে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই সংসদ ভবন ইতিহাস তৈরি হতে দেখেছে। দেশ ও গণতন্ত্রের আত্মার বাস এই সংসদে।”
বক্তব্য়ের শুরুতেই সংসদের সূচনা অধ্যায়ের কথা স্মরণ করে দেশের প্রধানমন্ত্রীদের কথা একে একে উল্লেখ করেন। প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু থেকে শুরু করে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, পিভি নরসিমহা রাও, অটল বিহারী বাজপেয়ীর কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “জওহরলাল নেহরুর ‘ইন দ্য স্ট্রোক অব মিডনাইট’ বক্তব্য গোটা দেশকে অনুপ্রাণিত করেছিল। অটল বিহারী বাজপেয়ী বলেছিলেন, সরকার আসবে, যাবে, কিন্তু দেশকে থাকতে হবে। এই বক্তব্যগুলি সবসময় মনে থাকবে।”
বিআর আম্বেদকরের দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাধারা দেশকে শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সংসদের ইতিহাসে ভাল ও খারাপ-দুই দিকেরই তুলনা টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই সংসদ ভবন অনেক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের সাক্ষী রয়েছে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্য়াহার, এক র্যাঙ্ক-এক পেনশন, জিএসটির মতো একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আবার এই সংসদ ভবনই প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সময়কালে ক্যাশ ফর ভোটের মতো দুর্নীতিরও সাক্ষী থেকেছে। এই সংসদ যেমন চারজন সাংসদের দলকে ক্ষমতায় বসে থাকতে দেখেছে, তেমনই ১০০ জন সাংসদ নিয়েও দলকে বিরোধীদের আসনে বসে থাকতে দেখেছে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন ও সেই যুদ্ধে সমর্থনের মতো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত যেমন এই সংসদে নেওয়া হয়েছিল, তেমন জরুরি অবস্থা চলাকালীন গণতন্ত্রের উপর হামলাও করা হয়েছিল। এই সংসদ ভবনেই ভোটদানের বয়স ১৮ বছরে কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। নরসিমহা রাওয়ের সরকার পুরনো অর্থনীতি ছেড়ে নতুন অর্থনীতি গ্রহণ করেছিলেন। আবার অটল বিহারী বাজপেয়ীর সময়ে সর্বশিক্ষা অভিযান, নিউক্লিয়ার স্পেসের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। মনমোহনজীর সরকারে ক্যাশ ফর ভোটের মতো দুর্নীতির ঘটনারও সাক্ষী রয়েছে এই সংসদ। এই সদনেই আবার গরিবদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের সিদ্ধান্তও এই সদনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গৃহীত হয়েছিল।”