
নয়াদিল্লি: ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ বিরতিতে কি মধ্যস্থতা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প? ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতিতে তাঁর ভূমিকার কথা একাধিকবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন ট্রাম্প। তার জেরে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। এবার তার জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জবাব দিলেন ট্রাম্পকে ফোন করেই। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ফোন করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট বার্তা দিলেন, ইসলামাবাদের অনুরোধেই সংঘর্ষ বিরতিতে সম্মত হয় ভারত। এখানে ট্রাম্পের কোনও ভূমিকা ছিল না। ফোনে ৩৫ মিনিট কথা হয় দুই রাষ্ট্রপ্রধানের।
বুধবার বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফোনে ৩৫ মিনিট কথোপকথন হয়েছে। কানাডায় জি৭ সম্মেলনের ফাঁকে তাঁদের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্মেলন থেকে আগেভাগে চলে যাওয়ায় দুই রাষ্ট্রপ্রধানের পার্শ্ববৈঠক সম্ভব হয়নি।” তারপরই এদিন মোদী-ট্রাম্পের ফোনে ৩৫ মিনিট কথোপকথন হয় বলে তিনি জানান।
বিদেশ সচিব জানান, “পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর এই প্রথম দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে কথা হল। অপারেশন সিঁদুর নিয়ে ট্রাম্পকে জানান প্রধানমন্ত্রী মোদী।” মিস্রী জানান, ট্রাম্পকে স্পষ্ট ভাষায় প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত কখনও মধ্যস্থতাকারীর সাহায্য নেয়নি, ভবিষ্যতেও নেবে না। বিদেশ সচিবের কথায়, “প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে জানিয়ে দেন, পুরো ঘটনাক্রমে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কোনও কথা হয়নি। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে আমেরিকার মধ্যস্থতা নিয়েও আলোচনা হয়নি। সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সরাসরি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। পাকিস্তানের অনুরোধেই ভারত সংঘর্ষ বিরতিতে সম্মত হয়েছে।”
এদিন ট্রাম্পের সঙ্গে কথোপকথনে মোদী স্পষ্ট করে দেন, এবার থেকে কোনওরকম সন্ত্রাসবাদী হামলাকে যুদ্ধ হিসেবেই ভারত দেখবে। পাকিস্তানের গুলির জবাব গোলার মাধ্যমে দেবে ভারত। মিস্রী জানান, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইকে সমর্থন জানানোর কথা বলেছেন ট্রাম্প। এই মুহূর্তে কানাডা সফর সেরে ক্রোয়েশিয়া রওনা দিয়েছেন মোদী। তাঁকে আমেরিকা যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান ট্রাম্প। কিন্তু, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় এখন তিনি আমেরিকা যেতে পারবেন না বলে ট্রাম্পকে জানিয়েছেন মোদী।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে পর্যটকদের উপর হামলা চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। ১৫ দিনের মাথায় পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জায়গায় আঘাত হানে ভারতীয় সেনা। একাধিক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয়। তারপরই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে। গত ১০ মে পাকিস্তান সেনার ডিজিএমও ভারতীয় সেনার ডিজিএমও-কে ফোন করেন। তারপরই দুই দেশ সংঘর্ষ বিরতিতে সম্মত হয়। এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্পের পোস্ট ঘিরে প্রশ্ন উঠে। ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ বিরতিতে তাঁর মধ্যস্থতার কথা জানান ট্রাম্প। যা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। এবার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথোপকথনেই তার জবাব দিলেন মোদী।