নয়া দিল্লি: বছরের শেষ সপ্তাহে এসেও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ (COVID-19)। উপরি পাওনা হিসাবে জুটেছে ওমিক্রন (Omicron) সংক্রমণও। করোনার এই অতি সংক্রামক ভ্যারিয়েন্টে ইতিমধ্যেই দেশে ৭৮১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতেই ফের একবার মন্ত্রীদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। সূত্রের খবর, বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ মন্ত্রিসভার সকল সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী। আলোচনা হতে পারে দেশের করোনা ও ওমিক্রন পরিস্থিতি নিয়ে।
চলতি মাসেই দেশে প্রথম ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। এক মাসও কাটেনি, এরই মধ্যে দেশের ২১ টি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এই সংক্রমণ। আক্রান্তের সংখ্যাও প্রায় ৮০০-র কাছাকাছি। ওমিক্রন সংক্রমণ বাড়ার পাশাপাশি দেশের করোনা সংক্রমণও এক ধাক্কায় ৬ হাজার থেকে ৯ হাজারে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে ফের একবার জরুরি বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী।
সূত্রের খবর, সকল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকেই উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। আগেই প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন, বর্ষশেষের উদযাপনে মন্ত্রীরা যেন কোথাও না যান। তাদের সকলকেই বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আজকের বৈঠকে যেহেতু করোনা পরিস্থিতি ও আগামী বছরে উত্তর প্রদেশ, পঞ্জাবের মতো রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করা হবে, সেই কারণে সকল মন্ত্রীর মতামতই জানতে চাওয়া হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা ছাড়াও স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিভিন্ন আধিকারিকরাও উপস্থিত থাকতে পারেন এই বৈঠকে।
গত সপ্তাহেই বৃহস্পতিবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যাবতীয় তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের ওমিক্রন সংক্রমণ নিয়ে সতর্ক ও কড়া নজরদারির নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিগত এক সপ্তাহেই যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা দুই থেকে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, তা নিয়ে এ দিনের বৈঠকে প্রশ্ন করবেন প্রধানমন্ত্রী, এমনটাই সূত্রের খবর।
একইসঙ্গে সংক্রমণ মোকাবিলায় কেন্দ্র ও রাজ্যগুলি কতটা প্রস্তুত, হাসপাতালের পরিকাঠামো, চিকিৎসা সামগ্রী ও অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে কিনা, সে সম্পর্কেও জানতে চাইতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। সংক্রমণ প্রতিরোধে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন, তা নিয়েও মন্ত্রী ও শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
আগামী বছরে উত্তর প্রদেশ, পঞ্জাব সহ ৫ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন থাকায়, করোনা পরিস্থিতির মাঝেই কীভাবে প্রচার ও নির্বাচন সম্পন্ন করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা করা হবে এই বৈঠকে।
গত সপ্তাহেই কেন্দ্রের তরফে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে সতর্ক করে জানানো হয়েছিল যে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ভ্য়ারিয়েন্ট করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় কমপক্ষে তিনগুণ বেশি সংক্রামক। যে হারে দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে, তা রুখতে জেলা ও আঞ্চলিক স্তরে কড়া নজরদারি, কঠোর স্বাস্থ্যবিধি জারি এবং ওয়ার রুম চালু করে দ্রুত কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণার মতো জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৭৮১। দেশে সর্বাধিক ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে দিল্লি থেকে, সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩৮। এরপরই রয়েছে মহারাষ্ট্র (১৬৭), গুজরাট (৭৩), কেরল (৬৫), তেলঙ্গনা (৬২), রাজস্থান (৪৬)। কর্নাটক (৩৪), তামিলনাড়ু (৩৪), হরিয়ানা(১২)-তেও ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।