Delhi: বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশে পুশব্যাক? কী বলছেন দিল্লির জয়হিন্দ কলোনির বাঙালিরা?

Delhi: দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, জানুয়ারি থেকে গত ৬ মাসে রাজধানী থেকে ৭০০ জনের বেশি অনুপ্রবেশকারী ও ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ৭০০ জনের মধ্যে ৪৭০ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে পহেলগাঁও হামলার পর।

Delhi: বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশে পুশব্যাক? কী বলছেন দিল্লির জয়হিন্দ কলোনির বাঙালিরা?
কী বলছেন জয়হিন্দ কলোনির বাসিন্দারা?Image Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: সঞ্জয় পাইকার

Jun 25, 2025 | 6:03 PM

নয়াদিল্লি: বাংলায় কথা বললেই কি ভিনরাজ্য বসবাসকারীদের বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে? গত কয়েকদিনে এই নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর বেড়েছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ভিনরাজ্যে বাংলায় কথা বলতেই বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করা হচ্ছে। যদিও রাজ্য বিজেপির নেতাদের বক্তব্য, শুধুমাত্র অনুপ্রবেশকারী ও ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশিদের তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। রাজনৈতিক এই চাপানউতোরের মধ্যে কি বলছেন দিল্লির অভিজাত বসন্তকুঞ্জ এলাকার পাশে জয়হিন্দ কলোনিতে বসবাসকারী বাঙালিরা? বাংলায় কথা বললেই কি বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে?

জয়হিন্দ কলোনিতে গত ২৮ বছর ধরে বাস করেন কোচবিহারের মহম্মদ মজনুন মিঞা। পেটের টানে কোচবিহার থেকে দিল্লি এসেছিলেন ১৯৯৭ সালে। দুই সন্তান, স্ত্রী-কে নিয়ে চারজনের সংসার। কলোনিতে প্রবেশের মুখে স্বামী, স্ত্রী মিলে ছোট পানের দোকান চালান। কী বলছেন তিনি?

মজনুন মিঞা বলেন, “আমি ১৯৯৭ সাল থেকে এখানে আছি। তিন ভাই, ২ বোন এখানে রয়েছে। বাবাও আগে এখানে থাকতেন। বয়স হয়ে যাওয়ায় বাবাকে বাড়িতে রেখে এসেছি।” দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরিচয়পত্র দেখতে চায়। কোথায় বাড়ি জানতে চায় পুলিশ। মজনুন বলেন, “আমার কাছ থেকে সব জেনে কোচবিহারের বাড়িতেও গিয়েছিল পুলিশ। সেখানে গিয়ে পরিচয়পত্র দেখেছে।” তারপর অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ।

জয়হিন্দ কলোনির বাঙালিরা বলছেন, দিল্লির একাধিক বাঙালি বস্তিতে বুলডোজার চালানো হয়েছে। তবে পরিচয়পত্র ঠিক থাকলে যে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, সেকথা বলছেন জয়হিন্দ কলোনির বাসিন্দা আশরাফুল হক। তিনি বলেন, “আমি কোচবিহারের বাসিন্দা। ভোটার কার্ড দেখার পর ছেড়ে দিয়েছে। সেরকম কোনও সমস্যা দেখা যায়নি।”

ফজরু আলি প্রামাণিক নামে বাংলার আর এক বাসিন্দা বলেন, “পুলিশ ভাবে ওরা বাংলায় কোথায় বলছে, তাহলে হয়তো বাংলাদেশি। জিজ্ঞাসা করে, বাড়ি কোথায়? পরিচয়পত্র কী রয়েছে? বাংলাদেশি কি না?” আবার একজন বলেন, “পুলিশ এসে পরিচয়পত্র দেখে। বলে, এখানে পরিচয়পত্র করোনি কেন? আমরা তো এখানে কাজ করি। বাড়ি, জমি সব কোচবিহারে।”

দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, জানুয়ারি থেকে গত ৬ মাসে রাজধানী থেকে ৭০০ জনের বেশি অনুপ্রবেশকারী ও ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ৭০০ জনের মধ্যে ৪৭০ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে পহেলগাঁও হামলার পর। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলার পর বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিতকরণের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তারপরই অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে অভিযান আরও বাড়ানো হয়। এই সময়কালে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ভারতে অবৈধ বসবাসের জন্য চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানো হয়েছে ৫০ জনকে।

দিল্লিতে নির্বাচনের আগে থেকেই বাংলাদেশি চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ২০২৪ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে এবছরের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ২২০ জন বাংলাদেশিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ জন ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন।