পটনা : গতকালই বিহারে বিজেপি-জেডিইউ সরকারের পতন ঘটেছে। আজ শপথ গ্রহণ ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকারের। ফের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমারই। একদিনের ‘নাটকে’ উত্থান ‘নীজস্বী’ জোটের। সাংসদ-বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকের পর এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে আসা থেকে আরজেডি, কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নয়া সরকার গঠনের দাবি- সবটাই মঙ্গলবারই ঘটেছে। এবার নীতীশের শপথ গ্রহণের আগেই বিহারের নয়া রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে মুখ খুললেন প্রাক্তন জেডিইউ নেতা তথা ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। তিনি এদিন জানিয়েছেন, এই গোটা ঘটনায় নীতীশ কুমারই হলেন মূল অভিনেতা ও অনুঘটক। এর পাশাপাশি তিনি তেজস্বীর কথাও বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই নয়া সরকার পরিচালনায় বড় ভূমিকা পালন করবেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব।
প্রসঙ্গত, কাল থেকেই রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে শোনা যাচ্ছিল, নীতীশের সঙ্গ বদলের অন্যতম কারণ হল ২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে। তবে ২৪-র লোকসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে কংগ্রেসের বাইরে নিজেকে বড় বিরোধী নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। এবার সেই মমতাকেই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারেন নীতীশ কুমার। এমনটাই জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। তবে এই বিষয়টি নস্যাৎ করে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বিহারের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিকাশ সেই রাজ্যের কথা মাথায় রেখেই হয়েছে। আমি মনে করি না দেশে জাতীয় স্তরে একটি বিকল্প বিরোধী দল তৈরি করার চিন্তাভাবনা নিয়ে এটি করা হয়েছে।’ তবে এদিন একদা নীতীশ ঘনিষ্ঠ প্রশান্ত কিশোর জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের মহাজোট ও ২০২২ সালের এই জোটের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। সেই সময় জোট হয়েছিল রাজনৈতিক স্বার্থে আর ২০২২ সালে হয়েছে প্রশাসনিক স্বার্থে। এছাড়াও তিনি দাবি করেছেন, ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নীতীশ কুমারকে দেখে মনে হয়েছে যেন তিনি জোর করে বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন।
I believe the latest political developments in Bihar are specific to the state. I don’t think this is done with the thought of creating an alternate opposition on a national level in the country: Poll strategist Prashant Kishor pic.twitter.com/sleYBuWlhp
— ANI (@ANI) August 10, 2022
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গিয়েছে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, ‘গত ১০ বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলে আসছে। এই ঘটনাও তারই প্রমাণ। নীতীশ কুমার হলে মূল অভিনেতা ও অনুঘটক…বিহারের নাগরিক হিসেবে শুধুমাত্র আশা করা যায় যে, নতুন সরকার গঠনের ক্ষেত্রে তিনি দৃঢ় থাকবেন। আমি আশা করছি বিহারে রাজিনৈতিক স্থিরতা ফিরে আসবে। নীতীশ কুমার বলেছেন তিনি নতুন অধ্যায় শুরু করছেন। আমি আশা করছি তিনি বিহারের মানুষের আকাঙ্খা পূরণ করবেন।’ তিনি বলেছেন, ‘২০১৩-১৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে ষষ্ঠবার বিহারে সরকার গঠন হতে চলেছে। কারোর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাহিদা পূরণ না হলে গঠন বদল করা হয়। বিহারের মানুষ আশা করবেন এই জেডিইউ-আরজেডি জোট দীর্ঘস্থায়ী হবে। এই জোটের অগ্রাধিকারগুলি মানুষের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত। এখন দেখতে হবে নতুন সরকার আগের সরকারের থেকে ভাল কাজ করবে কি না।’ তিনি এদিন আরও বলেছেন, ‘বিহারের বর্তমানে একক বৃহত্তম দলের নেতা হলেন তেজস্বী যাদব। সম্ভবত এই নয়া সরকার পরিচালনায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। মানুষ দেখতে পারবেন তিনি নতুন সরকারে কীভাবে কাজ করেন।’