শ্রীনগর: বজ্রপাতের জেরে আগুন নয়, সেনার গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল শক্তিশালী গ্রেনেডই (Grenade)! সেই গ্রেনেডের আঘাতেই জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টরে (Poonch Terror Atrack) একটি সেনার গাড়িতে আগুন ধরে যায়। অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ৫ সেনা কর্মীর। বৃহস্পতিবারের এই ঘটনাকে প্রাথমিকভাবে দুর্ঘটনা বলে মনে করা হলেও, সেনা বাহিনীর তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হল যে দুর্ঘটনা নয়, নাশকতামূলক হামলা চালানো হয়েছে। পুঞ্চের মান্ধার এলাকায় সেনার গাড়ি লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়ে জঙ্গিরা। বিস্ফোরণের জেরে গাড়িতে আগুন ধরে যায়, বিস্ফোরণের আঘাতে ও অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে পাঁচ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। এই হামলার খবর পেয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh)। রাতেই সেনা প্রধান জেনারেল মনোজ পাণ্ডে (General Manoj Pandey) তাঁকে গোটা ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানান। এই হামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ(NIA)-কে।
সেনা বাহিনীর সূত্রে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটে নাগাদ জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরি সেক্টরের ভীমবের গলি ও পুঞ্চ এলাকার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল সেনা বাহিনীর একটি গাড়ি। হঠাৎ তাতে বিস্ফোরণ হয় এবং আগুন ধরে যায়। অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় পাঁচ জওয়ানের। ওই সময়ে যেহেতু ভারী বৃষ্টি হচ্ছিল, সেই কারণে প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, গাড়ির উপরে হয়তো বজ্রপাত হয়েছে এবং সেখান থেকেই গাড়িতে আগুন ধরে যায়। তবে পরে তদন্তে জানা যায়, বজ্রপাত নয়, সেনা বাহিনীর উপরে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা।
जम्मू-कश्मीर के पुंछ सेक्टर में हुए आतंकी हमले में हमारे 5 जवानों की शहादत का समाचार अत्यंत दुखद है।
उन वीरों को मैं अपनी विनम्र श्रद्धांजलि अर्पित करता हूं और उनके शोकाकुल परिवारों को अपनी गहरी संवेदना व्यक्त करता हूं।
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) April 20, 2023
সেনাবাহিনীর গাড়িতে গ্রেনেড নিয়ে হামলার ঘটনার তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ-কে। বৃহস্পতিবারই এনআইএ-র একটি দলকে পুঞ্চে পাঠানো হয়েছে। দিল্লি থেকে এনআইএ-র একটি ফরেন্সিক দল পাঠানো হচ্ছে।
সেনার বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ট্রাকটি ভীমবের গলি থেকে সানগিয়ের দিকে আসছিল। সেই সময়ই জঙ্গিরা ট্রাকটিকে লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি চালায় এবং তারপর গ্রেনেড ছোড়ে। ওই এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে দৃশ্যমানতা কম ছিল। তারই সুযোগ নেয় জঙ্গিরা। দৃশ্যমানতা কম থাকার কারণে হামলাকারীদেরও দেখা যায়নি।
গ্রেনেড হামলা ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা হলেন হাবিলদার মন্দীপ সিং, ল্যান্স নায়েক দেবাশীষ বাসওয়াল, ল্যান্স নায়েক কুলবন্ত সিং, সিপাই হরকিষাণ সিং ও সিপাই সেবক সিং। গুরুতর জখম হয়েছেন আরও এক জওয়ান। তাঁকে সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পাঁচ সেনা কর্মীর মৃত্যুর খবর পেয়ে শোক প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেনাদের মৃত্যুর খবরে তিনি ব্যথিত বলেই জানিয়েছেন। সেনা প্রধান জেনারেল মনোজ পাণ্ডের কাছ থেকে তিনি ঘটনার বিস্তারিত তথ্যও জানেন। অন্যদিকে, জম্মু-কাশ্মীরের পিপলস ডেমোক্রাটিক পার্টির নেত্রী মেহবুবা মুফতি ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও নিহত জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানান এবং হামলার তীব্র নিন্দা করেন।