পটনা: বৃহস্পতিবার (১৮ মে), অবশেষে কর্নাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে পেরেছে কংগ্রেস। সদ্য সমাপ্ত কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনে দুর্দান্ত সাফল্য পেয়েছে শতাব্দী-প্রাচীন দলটি। আর এই একটি রাজ্যে কংগ্রেসের জয়ের বড় প্রভাব পড়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসকে কেন্দ্র করে বিজেপি বিরোধী জোট দানা বাঁধে কিনা তা সময় বলবে। তবে, এই জয়ের ফলে কংগ্রেস কর্মীরা অনেক বেশি উজ্জীবিত, তা বলাই বাহুল্য। হতাশা কাটিয়ে তাঁরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারানো সম্ভব। তবে, কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের জয়ের ফলে যদি কংগ্রেস মনে করে যে, ২০২৪ সালের লোকসভাতেও একই রকম ভাল ফল করবে, তাহলে তারা ভুল করবে। সতর্ক করলেন প্রাক্তন ভোট কুশলী তথা রাজনৈতিক কর্মী প্রশান্ত কিশোর। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০১৩ সালের কর্ণাটক নির্বাচনেও জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে পর্যুদস্ত হয়েছিল। ২০১৮ সালেও কংগ্রেস তিনটি বড় রাজ্যে জয় পেয়েছিল, কিন্তু, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে মুখ থুবরে পড়েছিল।
প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, “কর্নাটকে সাফল্যের জন্য আমি কংগ্রেসকে অভিনন্দন জানাই৷ কিন্তু আমি এই দলের নেতা ও কর্মীদের সতর্ক করতে চাই যে, বিধানসভা ভোটের ফলাফলকে যেন তারা লোকসভা নির্বাচনের ফলের ইঙ্গিত বলে ভুল না করে। ২০১২ সালে উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টি স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু দুই বছর পরে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ রাজ্যের ৮০টি আসনের মধ্যে ৭৩টি আসনে জয়ী হয়েছিল। কংগ্রেসেরেও মনে থাকার কথা যে, ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং ছত্তিশগড়ে তারা সাফল্য পেয়েছিল। কিন্তু, মাত্র কয়েক মাস পরে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যগুলিতে তাদের শোচনীয় পারফরম্যান্স হয়েছিল।”
২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের পর, আর কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে ভোট কুশলীর কাজ করবেন না বলে জানিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর। তারপর নিজ রাজ্য বিহারে তিনি ‘জন সুরাজ যাত্রা’ নামে একটি রাজনৈতিক প্রচার শুরু করেছেন। তার আগে অবশ্য কংগ্রেসে যোগ দিতে চেয়েছিলেন তিনি। সংগঠনের খোল নলচে বদলে কংগ্রেসকে একের পর এক রাজনৈতিক ব্যর্থতা থেকে উদ্ধার করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, গান্ধী-সহ কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর তিনি হাত শিবির থেকে সরে এসেছিলেন। তারপর থেকে রাজ্যেই মন দিয়েছেন। তবে, কংগ্রেস পিকের বদলে পেয়ে গিয়েছে এক অন্য ভোট কুশলীকে। তিনি পিকেরই এক সময়ের সতীর্থ এসকে বা সুনীল কানুগোলু। কর্নাটকে কংগ্রেসের জয়ের নেপথ্য কান্ডারি এই সুনীল কানুগোলু বলেই জানা গিয়েছে। এমনকী রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রার স্ট্র্যাটেজিও তাঁরই নকশা করা বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর। তাই, পিকের সতর্কতা কতটা কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা কানে তোলেন, সেটাই এখন দেখার।