পটনা : সদ্য শরিক বদল করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। আরজেডি-কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠনের পর এখন বিরোধী ঐক্যে শান দিতে তৎপর জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমার। তিনি এই লক্ষ্যে সম্প্রতি একাধিক বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন। কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে সীতারাম ইয়েচুরি, শরদ পাওয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। এই আবহেই গতকাল পুরনো সঙ্গী প্রশান্ত কিশোরকে তোপ দাগেন নীতীশ। তিনি বলেন, পিকে বিজেপির সঙ্গে থাকতে চায়। এবার তাঁর এই চাঞ্চল্যকর মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিলেন পিকেও। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে নীতীশ কুমারের বেশ কিছু ছবি টুইটারে পোস্ট করেন। সেই পোস্টে কোনও ক্যাপশন ছিল না। যদিও পরক্ষণেই সেই পোস্টটি মুছে দেন ভোটকুশলী পিকে।
প্রসঙ্গত, নীতীশের শরিক বদলের পর থেকেই এই দুই প্রাক্তন রাজনৈতিক সঙ্গীর মধ্য একটা চাপা আক্রমণ পর্ব শুরু হয়েছিল। পিকে সেই সময় বলেছিলেন, ‘এক মাস আগেও শাসক দলের সঙ্গে ছিলেন নীতীশ কুমার, কিন্তু এখন বিরোধীদের সঙ্গে। এটা কতটা ভরসাযোগ্য সেটা জনগণ ঠিক করবেন। তবে আমার মনে হয় না বিহারে ক্ষমতার পরিবর্তন কোনওভাবে দেশীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে। এটি রাজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে আমার মনে হয়।’ বিহারে সরকারের পুনর্গঠনের পরই জল্পনা শুরু হয়েছিল ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন নীতীশ। কিন্তু সেরকম সম্ভবনায় জল ঢেলে কার্যত নিজের এই মন্তব্যের মাধ্যমে নীতীশের ক্ষমতাকে ছোটো করে দেখান পিকে।
এদিকে এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে একাধিক বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তিনি ২৪-র লোকসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য করে বিরোধী ঐক্যে শান দেওয়ার জন্যই এই সাক্ষাৎ করেছেন। এই আবহে নীতীশ কুমারকে গতকাল প্রশ্ন করা হয় বিরোধী জোটে প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকা কী হতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। এর উত্তরে নীতীশ বলেন, ‘ওই ব্যক্তি (পিকে) আমার সঙ্গে এসেছিলেন এবং আমি তাঁকে বলেছিলাম এই কাজ ছেড়ে দিয়ে আমার সঙ্গে যোগ দিতে। কিন্তু আমার কথায় কান দেননি তিনি। সারা দেশজুড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জন্য কাজ করে গিয়েছেন…এটাই তাঁর ব্যবসা।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘তিনি যেসব মন্তব্য করছেন তার কোনও অর্থ নেই…হয়ত তিনি বিজেপির সঙ্গে থাকতে চান। তিনি হয়ত তাঁদের সাহায্য করতে চান।’ গতকাল নীতীশের এই মন্তব্যের পরই বৃহস্পতিবার একটি টুইট করতে দেখা যায় কিশোরকে। সেইসব ছবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবেই দেখা গিয়েছে নীতীশ কুমারকে। কোথাও মোদীকে প্রণাম করার ভঙ্গিতে এবং কোথাও অভিনন্দন জানানোর ভঙ্গিতেই দেখা গিয়েছে নীতীশকে। তবে সেই টুইটে কোনও ক্যাপশন দেওয়া হয়নি। বিজেপির সঙ্গে নীতীশের সঙ্গে আঁতাত বোঝানোর জন্য যথেষ্ট বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে পরক্ষণেই সেই টুইট মুছে দেন ভোটকুশলী।