পূর্ব চম্পারণ: এবারে বিহারের উপ-নির্বাচনে সাফল্য পেয়েছে বিজেপি। জনতা দল ইউনাইটেড (JDU)-এর দখলে থাকা কুরহানি আসনটি ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। যা নিয়ে বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন জেডিইউ সুপ্রিমো তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এবার কুরহানি আসনটি বিজেপি দখল করে নেওয়ায় নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন এক সময়ের সহযোদ্ধা তথা প্রাক্তন নির্বাচনী কৌশলী প্রশান্ত কুমার ওরফে পিকে। কুরহানি আসনে বিজেপির জয়ের জন্য নীতীশ সরকারের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তোলেন পিকে। সরাসরি নীতীশ কুমারের সরকারকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ তকমা দিয়ে তিনি বলেন, “বিহারের মানুষ ব্যাপক দুর্নীতিতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছে।”
সম্প্রতি বিহারের ৩৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ পদযাত্রা করেছেন পিকে। তাঁর বিশেষ কর্মসূচি ‘জনসুরজ’-এর প্রচারেই এই পদযাত্রা করেন তিনি। মূলত ‘গণতান্ত্রিক প্ল্যাটফর্মে’ সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করার লক্ষ্যেই তিনি এই পদযাত্রা করেন এবং পদযাত্রা চলাকালীন রাজ্যের সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি বাক্যালাপ করেছেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে মোতিহারির (পূর্ব চম্পারণ) গোদাসান এলাকা থেকে সরাসরি নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে আঙুল তোলেন পিকে। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “মহাজোট সরকারের কাজকর্মে মানুষ খুশি নয়। গত কয়েকদিন ধরে আমি বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি এবং আমি নিশ্চিত যে, তারা রাজ্যের ব্যাপক দুর্নীতিতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছে। আর নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভেরই প্রতিফলন ঘটেছে কুরহানি উপ-নির্বাচনের ফলাফলে।”
গত ৫ ডিসেম্বর কুরহানিতে উপ-নির্বাচন হয়। তার দিন দুয়েক আগে কুরহানিতে এক নির্বাচনী সভা করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রশান্ত কুমারের দাবি, “নীতীশ কুমার সভাস্থলে পৌঁছতেই সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ দেখায়। হই-হট্টগোল শুরু করে দেয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে। সব জায়গাতেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানুষের রাগের এই বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে। এই মুখ্যমন্ত্রী নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া একটা ছোট গ্রামেও হাটেন না।”
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)-তে যোগদান করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু যোগদানের দু’বছর পরেই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কৃত করা হয়। তারপর থেকে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী কৌশলী হিসেবে ভূমিকা পালন করলেও সরাসরি বিহারের রাজনীতিতে তাঁকে দেখা যায়নি। তবে তাঁর সাম্প্রতিক পদযাত্রা বিহারের রাজনীতিতে পুনরায় পিকে-র প্রবেশের প্রস্তুতি বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।