Spy Satellite: মহাকাশে যুদ্ধের প্রস্তুতি, এবার গুপ্তচরের ‘স্পেশাল ফোর্স’ পাঠাবে ভারত

৪ ধরণের স্পাই স্যাটেলাইট নিয়ে তৈরি একটা বাহিনী। অনেকটা স্পেশাল ফোর্সের মতো। এই বাহিনীর মাথায় থাকে সুপার স্পাই। বাহিনীতে কম্যান্ডিং অফিসারের মতো। গুপ্তচরেরা ঠিকঠাক কাজ করছে কীনা, কীরকম কাজ করছে সেটাও তো বুঝতে হবে। এই দায়িত্ব সুপার স্পাইয়ের। স্পাই স্যাটেলাইটের পিছুপিছু তাঁরাও, মানে সুপার স্পাইরাও মহাকাশে যাবে।

Spy Satellite: মহাকাশে যুদ্ধের প্রস্তুতি, এবার গুপ্তচরের ‘স্পেশাল ফোর্স’ পাঠাবে ভারত

| Edited By: সোমনাথ মিত্র

Jul 05, 2025 | 5:19 PM

গোয়েন্দাদের উপর নজরদারি করতে হবে। সেজন্য একটা নতুন টিম খুব দরকারি। তো অবশেষে সেই টিম তৈরির কাজ শুরু হল। ভারতীয় মহাকাশ সংস্থার ঘোষণা, ২০২৭ সাল থেকে ধাপে ধাপে মহাকাশে যাবে ভারতের স্পাইরা। মহাকাশে ভারতের গুপ্তচর, অর্থাত্‍ নজরদার স্যাটেলাইট। অপারেশন সিঁদুর স্থগিত হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রক জানিয়েছিল, আগামী ৫ বছরে ৫২টি নজরদার স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠাবে ভারত। বছরে গড়ে ১০টা। চিন আর পাকিস্তানের প্রতি ইঞ্চির উপর নজর রাখাটাই প্রাথমিক উদ্দেশ্য। আর বাইরেও আরেকটা বিষয় রয়েছে। মহাকাশে একটা স্যাটেলাইট কনস্টিলেশন বা SCS তৈরি করতে চায় ভারত। স্যাটেলাইট কনস্টিলেশন ইন স্পেস।

৪ ধরণের স্পাই স্যাটেলাইট নিয়ে তৈরি একটা বাহিনী। অনেকটা স্পেশাল ফোর্সের মতো। এই বাহিনীর মাথায় থাকে সুপার স্পাই। বাহিনীতে কম্যান্ডিং অফিসারের মতো। গুপ্তচরেরা ঠিকঠাক কাজ করছে কীনা, কীরকম কাজ করছে সেটাও তো বুঝতে হবে। এই দায়িত্ব সুপার স্পাইয়ের। স্পাই স্যাটেলাইটের পিছুপিছু তাঁরাও, মানে সুপার স্পাইরাও মহাকাশে যাবে। সুত্রের খবর, ৫২টা স্যাটেলাইটের মধ্যে অন্তত ১০টি সুপার স্পাই স্যাটেলাইট পাঠাতে চাইছে সেনা এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রক। সেই মতোই ইসরোর কাছে নির্দেশ এসেছে। জানেন, এই মুহূর্তে ক’টা স্পাই স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়েছে ভারত? উত্তরটা চমকে দেওয়ার মতো। এখনও পর্যন্ত ভারতের হাতে একটাও স্পাই স্যাটেলাইট নেই। এই মুহূর্তে দেড়শোর বেশি ভারতীয় স্যাটেলাইট মহাকাশ থেকে তথ্য পাঠাচ্ছে। কিন্তু এর একটাও স্পাই স্যাটেলাইট নয়। অপারেশন সিঁদুরের সময় জঙ্গিঘাঁটি ও পাক বায়ুসেনার বেসগুলোকে টার্গেট করতে সেনার মূল ভরসা ছিল স্যাটেলাইট ছবি। ভারতের বিভিন্ন স্যাটেলাইটের তোলা ছবি বিশ্লেষণ করেই তৈরি হয়েছিল অপারেশনের খুঁটিনাটি। স্পাই স্যাটেলাইট থাকলে কাজটা অনেক দ্রুত, আরও নিখুঁত হতে পারত।

প্রসঙ্গত, ভারতের প্রত্যাঘাতে পাক বায়ুসেনা ঘাঁটির কী অবস্থা হয়েছে, সেটা বুঝতে বিদেশি সংস্থার উপর নির্ভর করতে হয়েছিল। ম্যাক্সার কর্পোরেশনের তোলা স্যাটেলাইট ছবিতে প্রথম ধরা পড়ে, ভারত কতটা ভয়ঙ্কর প্রত্যাঘাত করেছে। এই ছবিগুলো ইসরোর থেকে আসা উচিত ছিল। কিন্তু ইসরোর হাতে এত শক্তিশালী স্যাটেলাইট নেই। সেই কারণেই স্পাই স্যাটেলাইটের দরকার। কারণ স্পাই স্যাটেলাইট অন্য স্যাটেলাইটের থেকে আলাদা। কীভাবে আলাদা? এইসব স্যাটেলাইটে একেবারে আলাদা চারটে প্রযুক্তি থাকে। স্পেস, টাইমিং, কভারেজ এবং রেজোলিউশন। স্পাই স্যাটেলাইট মূলত দু-রকম। লো-অরবিট। হাই- অরবিট। লো-অরবিট স্পাই স্যাটেলাইট মানে নির্দিষ্ট, ছোট এলাকায় নজরদারি। ঝকঝকে ছবি। এমনকি ওই এলাকায় কখন, কীভাবে মানুষজনের আনাগোণা হচ্ছে, সেটাও ধরা পড়বে। হাই-অরবিট স্যাটেলাইট তুলনায় বড় এলাকায় নজরদারি চালায়। তবে এর তোলা ছবি অনেক সময়ই ততটা স্পষ্ট নয়। এর পাশাপাশি রয়েছে কসমিক স্যাটেলাইট। যা নির্দিষ্ট এলাকায় বেতার তরঙ্গ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। তাই স্পাই স্যাটেলাইট আজ এতটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ স্পাই স্যাটেলাইট যুদ্ধে জয়-পরাজয় নির্ধারণ করে দিতে পারে।

দেরিতে হলেও এবার এনিয়ে তেড়েফুঁড়ে নামছে ভারত। কিছুদিন আগে খোদ সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী জানিয়েছিলেন, চলতি বছরেই স্পেস ডকট্রিন প্রকাশ করবে ভারতীয় সেনা। অর্থাত্‍ ভারত কীভাবে মহাকাশ যুদ্ধের প্রস্তুতি নেবে, তার একটা রূপরেখা সামনে আসবে। ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন স্পেস কমান্ড নিয়ে উঠেপড়ে লেগেছেন। তাঁর ইচ্ছে, ২০২৭ সালেই মহাকাশে সামরিক মহড়ার প্রস্তুতি দেবে মার্কিন সেনা। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহাকাশ যুদ্ধ মানে কিন্তু মহাকাশে যুদ্ধ নয়। মহাকাশকে ব্যবহার করে যুদ্ধ। ভারতকেও সেই পথেই হাঁটতে হবে।