
নয়া দিল্লি: রাজ্যসভায় যোগ হবে নতুন চার মুখ। প্রথিতযশা আইনজীবী উজ্জ্বল নিকম, প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাকে রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে মনোনীত করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সমাজকর্মী সি সদানন্দন মাস্টার ও ইতিহাসবিদ মীনাক্ষী জৈনের নামও মনোনীত করা হয়েছে।
রাজ্যসভার চারজন মনোনীত সদস্যদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হচ্ছে। তার জায়গাতেই নিয়োগের জন্য গেজেট নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি মোট ১২ জন সদস্যকে মনোনীত করতে পারেন। তারা সাহিত্য, বিজ্ঞান, কলা বা সামাজিক কর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্য়ক্তিদেরই মনোনীত করতে পারেন।
উজ্জ্বল নিকম দেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ আইনজীবী। ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণ এবং ২৬/১১ মুম্বই হামলার মতো বড় সন্ত্রাসবাদী হানার মামলা লড়েছেন। গুলশান কুমার ও প্রমোদ মহাজনের হত্যাকাণ্ডের মামলাও লড়েছেন তিনি। ২০১৬ সালে তিনি পদ্মশ্রী সম্মান পান। গত বছর লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপি উজ্জ্বল নিকমকে মুম্বই নর্থ-সেন্ট্রাল আসন থেকে প্রার্থী করেছিল, কিন্তু তিনি হেরে যান।
অন্যদিকে, হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ২০২০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিদেশ সচিব ছিলেন। ২০২৩ সালে ভারত যখন জি-২০ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল, তখন চিফ কো-অর্ডিনেটর হিসাবেও কাজ করেছিলেন। তার আগে আমেরিকায় ভারতের রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশের হাই কমিশনার হিসাবেও কাজ করেছেন।
হর্ষবর্ধন শ্রিংলা নিজের একাধিক এনজিওর মাধ্যমে দার্জিলিং, শিলিগুড়ি এবং পাহাড়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বহু সমাজসেবামূলক কাজ করেন। বহু বছর হাই কমিশনার হিসেবে বাংলাদেশে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছেন। বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের সময় ভারতের বিদেশ নীতি সংক্রান্ত বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।
সি সদানন্দন মাস্টার কেরলের একজন শিক্ষাবিদ ও সমাজকর্মী। তিন দশক আগে সিপিএম কর্মীরা তাঁর দুটি পা কেটে নেয়। তারপরও প্রস্থেটিক পা লাগিয়ে তিনি সমাজ সেবা করে চলেন। ২০১৬ সালে তিনি কেরল বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন, তবে জয়ী হতে পারেননি।
মিনাক্ষী জৈন একজন ইতিহাসবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। ২০২০ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করা হয় শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য। তাঁর শিক্ষার মাধ্যমে তিনি ভারতবাসীর সামনে ইংরেজদের দ্বারা একাধিক ভারতীয় পরম্পরাকে বিকৃত রূপে প্রতিষ্ঠা করা, রামায়ণসহ ভারতের ইতিহাসকে ভারতবাসীর সামনে প্রকৃত রূপে ফুটিয়ে তোলা, মথুরা-কাশি-বৃন্দাবন সহ হিন্দুদের আরাধ্য স্থানগুলিকে কীভাবে বিদেশি লুটেরারা কব্জা করে নিয়েছে – এইসব সংক্রান্ত প্রকৃত ভারতের ইতিহাস মানুষের কাছে তুলে ধরেন। তাঁর লেখা ইতিহাস বই আজ এনসিআরটির পাঠ্যক্রমের অন্তর্গত যার মাধ্যমে বামপন্থী বিদেশী বিচারধারা নয়, প্রকৃত ভারতীয় সভ্যতা ও ইতিহাসকে জানছে বিদ্যার্থীরা।