
কলকাতা: আচ্ছা, ঘুম থেকে উঠে যদি কোনওদিন দেখেন, রোবট চা – বিস্কুট হাতে দাঁড়িয়ে কেমন লাগবে? কিংবা অফিস থেকে ফেরার পর যদি গরম জল এগিয়ে দেয় যন্ত্রমানবী? দেখুন এসবই কিন্তু ঘটতে চলেছে। আর সেজন্য ৪- ৫ বছরের বেশি অপেক্ষাও করবে হবে না বোধহয়। আমাদের দেশের তাবড় রোবোটিক্স বিশেষজ্ঞরা তো প্রধানমন্ত্রীকে তেমনই বললেন। প্রধানমন্ত্রী দেখলেন, তার সামনে এক যন্ত্রমানব হাত – স্যান্ডউইচ হাতে দাঁড়িয়ে। প্রথমে স্যান্ডউইচ ও পরে চা এগিয়ে এল সে। একেবারে এটিকেট মেনে পরিবেশন। নরেন্দ্র মোদী এক্স অর্থাত্ টুইটার হ্যান্ডেলে লিখেছেন, রোবোটিক্স গ্যালারির ক্যাফেতে রোবটের দেওয়া এক কাপ চা খেলাম। অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
গুজরাতের সায়েন্স সিটিতে রোবোটিক্স গ্যালারিতে উঠে এল এমনই টুকরো টুকরো ছবি। তাঁর নাম ধরে কেউ ডাকছে শুনে থমকে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী। আসলে উব্বু নামের রোবটই তার নাম ধরে ডাকছিল। আহমেদাবাদের সায়েন্স সিটিতে ১১ হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে রোবটিক্স গ্যালারি। এখানে প্রায় ১২ ধরনের রোবট রয়েছে। কোনটা আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স নির্ভর। কেউ আবার চার্জ হলেই কাজ করতে তৈরি।
রোবোটিক্স প্রযুক্তিকে কীভাবে বিভিন্ন কাজে লাগানো সম্ভব, তা নিয়ে সায়েন্স সিটির বৈজ্ঞানিক ও গবেষকদের সঙ্গে কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, চিকিত্সা হোক বা ঘরের কাজ – অনেক কাজেই, দক্ষ রোবট তৈরি করে ফেলেছে ভারত। তবে রোবট নিয়ে এখনও সচেতনতা এখনও তেমন বাড়েনি। দামও আকাশছোঁয়া। তাই যথেষ্ট সুযোগ সত্ত্বেও এর ব্যবহার তেমন বাড়ছে না। কীভাবে এই সমস্যা মিটবে, তা নিয়ে পিএমও-তে প্রস্তাব পাঠাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
অন্যদিকে, আপনার-আমার বা আমাদের পরিবারে বহু সমস্যার সমাধান করে দেবে, এমন রোবটও কিন্তু ভারত তৈরি করে ফেলেছে। যেমন, পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীর দেখাশোনা, তার প্রয়োজনমতো সাহায্য করা। নয়াদিল্লির জোরো রোবোটিক্স রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রিসার্চ হেড দিবাকর বৈশ্য একটি রোবট
তৈরি করেছেন। সেই রোবোটগুলি মানুষের মনের কথা বুঝে কাজ করতে পারে। এমনকী ২ ফুট উচ্চতার ২ কিলোগ্রামের এই থ্রিডি-রোবট নাচ, ফুটবল খেলা, পুশ-আপের মতো নানা কাজ করতে পারবে। এই যন্ত্রমানবের দাম কমবেশি আড়াই লক্ষ টাকা। আবার আহমেদাবাদের গ্যালারিতে রয়েছে
ব্যালেন্সিং রোবট। এই রোবোটের উপর ভারী কিছু চাপিয়ে দিলে সহজেই ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে। যাঁরা মেরুদণ্ডের সমস্যা ভুগছেন, তাঁদের প্রকৃত বন্ধু হয়ে উঠতে পারে এই রোবট। স্নায়ুরোগে অনেকের মেরুদণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ে। এই রোবট সেই দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করতে পারে।
ভারতের একটি স্টার্ট আপ সংস্থা এমন একটি রোবট তৈরির কাজ চালাচ্ছে, যার হাত হবে অবিকল মানুষের মতো। হাত নেই, বা নষ্ট হয়ে গিয়েছে, এমন মানুষ সহজেই রোবটের এই হাত ব্যবহার করতে পারবেন। এই স্টার্স্টআপে লগ্নি করেছেন রতন টাটা, নন্দন নিলেকানির মতো ব্যক্তিত্ব। গুজরাতের রোবোটিক্স গ্যালারির অধিকর্তা পিটিআইকে বলেছেন, ব্যস্ততার যুগে রোবট মুশকিল আসান হতে পারে।