কোচি: প্রশ্নপত্রে অবমাননাকর ধর্মীয় মন্তব্য করার অভিযোগে, ২০১০ সালে হাত কেটে নেওয়া হয়েছিল কেরলের থুড়ুপুঝার নিউম্যান কলেজের অধ্যাপক টিজে জোসেফের। বুধবার (১২ জুলাই), এই চাঞ্চল্যকর মামলায় নিষিদ্ধ সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া বা পিএফআই-এর ছয় সদস্যকে দোষী সাব্যস্ত করল এক বিশেষ এনআইএ আদালত। এদিন এই মামলার বিচারের দ্বিতীয় পর্যায়ে বিশেষ এনআইএ আদালতের বিচারক অনিল কে ভাস্কর এই ছয়জনকে ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনে হত্যার চেষ্টা এবং ষড়যন্ত্র-সহ বিভিন্ন অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছেন। কয়েকজনকে বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন বা ইউএপিএ-র ধারাতেও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এই মামলার অপর পাঁচ আসামিকে অবশ্য বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
এই মামলার প্রথম পর্যায়ে ৩১ জন অভিযুক্তের বিচার হয়েছিল। ২০১৫ সালের এপ্রিলে, ইউএপিএ, বিস্ফোরক পদার্থ আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারায় ১০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। অপরাধীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল আরও তিনজনকে। বাকি ১৮ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই সময়, ১১ জনকে বিচারের আওতায় আনা যায়নি। পরে তাদের আটক করেছিল পুলিশ। এই ১১ জনকে নিয়েই শুরু হয়েছিল দ্বিতীয় পর্যায়ের বিচার।
এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১০ সালের ৪ জুলাই। এর্নাকুলাম জেলার মুভাট্টুপুজার এক গির্জায় সপরিবারে রবিবারের সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। বাড়ি ফেরার পথে, তাঁর এবং তাঁর পরিবারের উপর হামলা হয়েছিল। সাত জন দুষ্কৃতীর এক দল, অধ্যাপককে গাড়ি থেকে টেনে বের করে বেধড়ক মারধর করে। তারপরে তাঁর ডান হাত কবজি থেকে কেটে দেওয়া হয়। তাঁর বাঁ পায়ে ছুরিকাঘাতও করা হয়। হাত কাটার ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছিল সাভাড় নামে এক পিএফআই সদস্যের নাম। তাকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। কাজেই তার বিচারও হয়নি।
প্রাথমিকভাবে এই মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিল কেরল পুলিশ। তারা জানিয়েছিল, নিউম্যান কলেজে বিকম সেমেস্টার পরীক্ষার এক প্রশ্নে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করা হয়েছে, এই অভিযোগেই অধ্যাপক জোসেফকে হত্যা করতে চেয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ঘটনার সময় নিউম্যান কলেজের মালয়ালম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান পদে ছিলেন অধ্যাপক জোসেফ।