কলকাতা: ফের প্রত্যাবর্তনের হাওয়া ঘাসফুল শিবিরে। এবার ফেরার জল্পনা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee)। চলতি বছরের রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পদ্মশিবিরে যোগ দেন তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা। ভোটের পর থেকেই বেসুরো রাজীব। আজ আগরতলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর।
জল্পনাটা শুরু হয়েছিল গত জুনে। একুশের নির্বাতনের ফল প্রকাশের পরপরই। এক শুক্রবারে, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন মুকুল রায় (Mukul Roy)। আর তার ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) বাড়িতে পৌঁছন আরও এক বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বিধানসভা ভোটের কয়েক দিন আগেই যোগ দিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরে। কয়েক দিন আগে তাঁর একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে জল্পনা বাড়ে। এ বার সেই জল্পনা আরও উস্কে কুণাল ঘোষের বাড়িতে হাজির হন তিনি।
ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই নতুন করে রাজ্যে দলবদলের হাওয়া। ফরে ‘বেসুরো’ হচ্ছেন অনেক নেতাই। সেই দলেই ছিলেন রাজীব। সম্প্রতি হেস্টিংসে বিজেপির দলীয় বৈঠকে মুকুল রায়ের মতো রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দেখা যায়নি। সে দিন থেকেই জল্পনা শুরু। এরপর ফেসবুকে বিস্ফোরক পোস্ট। সেখানে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী লেখেন, “সমালোচনা তো অনেক হল….মানুষের বিপুল সমর্থন নিয়ে আসা সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভালভাবে নেবে না।” হুবহু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই তিনি লেখেন, “আমাদের সকলের উচিত রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে কোভিড ও ইয়াস-এর মতো দুর্যোগে মানুষের পাশে থাকা।” এরপর থেকেই রাজীবের মতিগতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। তবে কি পদ্ম শিবিরে ভাল নেই রাজীবও?
মুকুল রায়ের প্রত্যাবর্তনে পরই রাজীবের ফেরার সম্ভাবনা দেখছিল রাজনৈতিক মহল। কুণালের বাড়িতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক ঘিরে জল্পনার পারদ চড়ে ক্রমশ। কুণালের সুকিয়া স্ট্রিটের বাড়িতে পৌঁছেছেন রাজীব। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছাড়াই এসেছিলেন তিনি। নিজের গাড়িতেও যাননি। সম্ভবত বৈঠকের গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্যই এমন সাধারণভাবে যান রাজীব।
কুণালের বাড়ি থেকে যে গাড়িতে ফিরেছিলেন, তার সামনে ছিল তৃণমূলের উত্তরীয় রাখা। দলবদলের তীব্র জল্পনা উস্কে দিয়ে
অগাস্টের আরও এক শুক্রবার তিনি সাক্ষাৎ করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। অভিষেক-রাজীবের এই সাক্ষাৎকার রাজনৈতিক মহলে নতুন জল্পনার জন্ম দেয়। তিনি একাধিক সময় নানা অছিলায় কখনও কুণাল ঘোষ, কখনও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন, তা আসলে নৈকট্য বৃদ্ধির প্রচেষ্টা বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। শেষমেশ জল্পনা অবসান।
রাজীব যেদিন তৃণমূব ছেড়েছিলেন, সেদিনও তাঁর হাতে ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি, চোখে ছিল জল! অনেকেই বলেছিলেন, রাজীব নাকি দুটো পথই খোলা রাখতে চেয়েছিলেন। একটা নির্বাচন আর তার পরবর্তী পরিস্থিতি বাস্তবায়িত করল সেই অনুমানকেই।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের রায়ে কাটল জট, সারা রাত ধরে অভিষেকের সভার মঞ্চ বাঁধতে বসল তৃণমূল